বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে কাতার তার রাজধানী দোহার কেন্দ্রে ওই এলাকার হাজার হাজার বিদেশি কর্মীদের থাকার অ্যাপার্টমেন্টগুলো খালি করছে। এই সব অ্যাপার্টমেন্টে বিশ্বকাপের সময় ফুটবল ভক্তরা থাকবেন। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন উচ্ছেদ হওয়া শ্রমিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন যে এক ডজনেরও বেশি বহুতল কর্তৃপক্ষ খালি করে বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ঠিকানা খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে কাতারে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা। অনেকে নতুন ঠিকানা না-পেয়ে আপাতত ফুটপাথেই রাত কাটাচ্ছেন।
আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হতে চলেছে বিশ্বকাপ ফুটবল। হাতে আর একমাসও নেই। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি কর্মীদের প্রতি কাতারের আচরণ এবং বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। আর, তারা তদন্ত শুরু করেছে।
দোহার আল মানসুরা জেলার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানকার এক বিল্ডিংয়ে ১,২০০ লোক বাস করছিলেন। বুধবার রাত ৮টা নাগাদ সেখানে পুলিশ আসে। ওই বহুতলের লোকজনকে বাড়ি খালি করতে নির্দেশ দেয়। সঙ্গে জানায় যে তাদের ছাড়ার জন্য হাতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় আছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুলিশ ও পুরকর্মীরা রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই বহুতলে ফিরে আসেন। আর, বাড়ির সবাইকে জোর করে বের করে দেন। ঘরগুলোর দরজা বন্ধ করে দেন। সবচেয়ে বড় কথা, কিছু লোক তাঁদের জিনিসপত্র সংগ্রহ করার জন্য সময়মতো ওই বাড়িতে ফিরে আসতে পারেননি। তাঁদের জিনিসপত্র ওই সব বাড়ির মধ্যেই থেকে যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা এই ব্যাপারে বলেন, 'আমাদের এখন কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।'
আরও পড়ুন- বিধানসভা নির্বাচনে ব্যুমেরাং ‘অগ্নিপথ প্রকল্প’, প্রতিরক্ষায় স্থায়ী চাকরির অভাবে ফুঁসছে হিমাচলবাসী
তবে, বেশি কিছু বললে কাজ চলে যেতে পারে। এই ভয়ে অনেকে মুখ খুলতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে ঘর খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে বিদেশি কর্মীদের থেকে। কারণ, তাঁদের সংখ্যাটা প্রচুর। কেউ ২৫ মাইল, কেউ আবার ৩০ মাইল দূরে কোথাও ঘরের সন্ধান পেয়েছেন। তবে, বেশিরভাগই এখনও নতুন ঘরের সন্ধান পাননি।
এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো উলটো সুরে গেয়েছেন কাতারের প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তাঁরা দাবি করেছেন, 'যাঁদের ঘর থেকে সরানো হয়েছে, প্রত্যেককে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। নিরাপদ ও উপযুক্ত জায়গাতেই প্রত্যেককে সরানো হয়েছে।' কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজকরা আবার গোটা পরিস্থিতির দায় প্রশাসনের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছেন।
Read full story in English