Advertisment

জিগনেশ মেওয়ানির সভা বাতিল করল তাঁর প্রাক্তন কলেজ

"আমরা ১৫-২০ দিন আগে জিগনেশ মেওয়ানিকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানাই। এই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র বলেই আমরা তাঁকে আনতে আগ্রহী ছিলাম।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কলেজের বার্ষিক উৎসবের অন্তর্গত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল গুজরাতের বিধায়ক তথা বিজেপি-বিরোধী দলিত নেতা জিগনেশ মেওয়ানির। রবিবার সেই অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হলেন আহমেদাবাদের এইচ কে আর্টস কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, কিছু বিজেপি ছাত্রনেতার চাপের মুখে অনুষ্ঠানের জন্য হল দিতে অস্বীকার করে কলেজের নিয়ন্ত্রক ট্রাস্ট। অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল আজ, সোমবার। উল্লেখ্য, মেওয়ানি এই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র।

Advertisment

কলেজের অধ্যক্ষ হেমন্ত কুমার শাহ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "আমাদের কলেজের বার্ষিক উৎসব হওয়ার কথা সোমবার। আমরা ১৫-২০ দিন আগে জিগনেশ মেওয়ানিকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানাই। এই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র বলেই আমরা তাঁকে আনতে আগ্রহী ছিলাম। কিন্ত গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিজেপির কিছু ছাত্রনেতা এই আমন্ত্রণকে ভালো চোখে দেখে নি। আমাকে এবং কলেজের ট্রাস্টকে হুমকি দিয়ে তারা জানায়, অনুষ্ঠানে এসে শান্তিভঙ্গ করবে তারা, পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও।"

আরও পড়ুন: এ রথ রামের নয়, নাথুরামের: কানহাইয়া কুমার

শাহ আরও জানান, হুমকি শুনেও তিনি এবং কলেজের সহ-অধ্যক্ষ মোহনভাই পরমার মেওয়ানিকে প্রধান অতিথি করেই অনুষ্ঠান করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। "আমরা কলেজের ট্রাস্টকেও জানাই সেকথা। কিন্তু ট্রাস্টিরা আমাদের বলেন, 'কলেজ এবং ট্রাস্টের স্বার্থে, এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, আমরা আপনাদের হল দিতে পারব না'। তাঁরা এও বলেন যে আমাদের অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া উচিত... আমি তাঁদের লিখিতভাবে এই নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ জানাই, যার পর তাঁরা স্পষ্ট ভাষায় লিখে দেন যে অনুষ্ঠানের জন্য তাঁরা হল দিতে রাজি নন," বলেন অধ্যক্ষ। তাঁর বক্তব্য, এরপর অনুষ্ঠান বাতিল না করে উপায় ছিল না।

"কলেজ প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়, কারণ ৫০০-৬০০ ছাত্রছাত্রীকে মেডেল, ট্রফি, শংসাপত্র ইত্যাদি প্রদান করার কথা প্রধান অতিথির। জিগনেশ অনুষ্ঠানে আসতে রাজি ছিলেন, কিন্তু ট্রাস্ট হলঘর না দিলে আমরা কী করতে পারি?" প্রশ্ন শাহের। শেষমেশ তাঁরা ঠিক করেন, অন্য কোনো প্রধান অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর চেয়ে অনুষ্ঠান বাতিল করাই ভালো। শাহের মন্তব্য, "আমার মতে এটি গণতন্ত্রের হত্যা। যে কোনো মানুষের তাঁর চিন্তাধারা ব্যক্ত করার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু ট্রাস্টের সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত হতাশ। আমি তাঁদের এ বিষয়ে চিঠি লিখব।"

আরও পড়ুন: ‘পরিকল্পিত বিতর্ক’, জেএনইউ কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি দুই প্রাক্তন এবিভিপি সদস্যের

তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মেওয়ানি বলেন, "আমি কালও যেতে রাজি ছিলাম, আজও আছি। কিন্তু কলেজের ট্রাস্টিরাই তো সরে গেছেন।" তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের এই আচরণকে "মেরুদণ্ডহীনতার প্রদর্শন" আখ্যা দিয়েছেন।

শাহের কথা অনুযায়ী, কলেজের নিয়ন্ত্রক ব্রহ্মচারীবাদী ট্রাস্টের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন প্রখ্যাত বাস্তুকার বিভি দোশি, এবং রঘুবীর চৌধুরী ও কুমারপাল দেশাইয়ের মতন লেখক। দোশি এবং দেশাই দুজনেই পদ্ম সম্মান লাভ করেছেন, ওদিকে চৌধুরী পেয়েছেন জ্ঞানপীঠ পুরস্কার।

ট্রাস্টের সম্পাদক অমরিশ শাহের সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। অন্যদিকে, বিজেপির যুব শাখা তাদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার গুজরাত শাখার সভাপতি রুতভিজ প্যাটেল জানিয়েছেন, "আমরা এই ধরনের অগভীর রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। এই ঘটনায় আমাদের কোনো ভূমিকা নেই।"

Read the full story in English

Advertisment