Advertisment

শিশুদের ক্ষেত্রে অনেকসময় ওমিক্রন হয়ে উঠতে পারে 'বিপজ্জনক', জানালেন AIIMS প্রধান

শিশুদের যদি তিনদিনের বেশি জ্বর থাকে, খাওয়া-দাওয়ায় রুচি না থাকে, ক্লান্তি, নাকবন্ধ, সর্দি এবং শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়, এবং অক্সিজেনের স্যাচুরেশন যদি ৯৫ শতাংশের নীচে নেমে যায় তাহলে কিন্তু ততক্ষনাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

শিশুদের ক্ষেত্রে অনেকসময় ওমিক্রন হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক, জানালেন এইমস প্রধান

বর্তমানে যেভাবে ওমিক্রন দেশে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক সমাজ। রোজই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ সেই সঙ্গে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এবং মৃত্যুও। বেশ কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে। এমন অবস্থায় শিশুদের আরও বেশি সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। তিনি বলেছেন, ‘ওমিক্রন যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে তা সবসময়ের জন্যই আতঙ্কের। আর সব থেকে আতঙ্ক শিশুদের নিয়েই, কারণ তাদের একটা বেশির ভাগ অংশ এখনও টিকা পায়নি’। ইতিমধ্যেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বারবার সাবধান করে বলা হয়েছে ওমিক্রনে আগের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক শিশু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে গুলেরিয়া বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে কারণ বেশিরভাগই এখনও টিকাহীন’।

Advertisment

তাঁর কথায়, ‘শিশুস্বাস্থ্য সবসময়ই চিন্তার ব্যাপার কিন্তু যখন বিষয়টা অজানা রোগের সঙ্গে হয়, তখন তা আরও বেশি জটিল হয়ে পড়ে’। ‘সম্প্রতি আমেরিকা ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে যেভাবে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, তাতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন শিশু, ওমিক্রন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে বেশ কিছু জটিলতাও সৃষ্টি হয়েছে’। তিনি আরও জানান, ‘এখন সময় এসেছে শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে আরও বেশি করে ভাববার’। তাঁর কথায়, ‘আমরা দেখেছি কত দ্রুত ওমিক্রন তার প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা রাখে। দেশে ওমিক্রন যেভাবে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে তাতে করে শিশুদের এই ভাইরাস থেকে দূরে রাখা আমদের কাছে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের’।

পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের একজন সিনিয়ার ডাক্তার জানান, বড়দের মধ্যে যেমন করোনার সঙ্গে অন্যান্য নানান উপসর্গ থাকে সেক্ষেত্রে রিস্ক ফ্যাক্টর অনেক বেশি থাকে। কোর্মিবিডিটি যুক্ত মানুষরা অনেক বেশি ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারাও যাচ্ছেন। শিশুদের ক্ষেত্রে সেরকম কোর্মিবিডিটি প্রায় সেভাবে থাকেনা। তাই তারা আক্রান্ত হলেও, সেভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়না। তবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিশুরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের শরীরে নানান রকম অন্যান্য জটিলতা দেখা যাচ্ছে। তাই আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। কী করব, কী করবো না সেই ব্যাপারে একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা এই সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, একমাত্র সঠিক মাস্কের ব্যবহারই আমাদের পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে। বাড়ির বড়রাই বাচ্চাদের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠুন। তাঁদের মাস্ক পরতে শেখান। সেই সঙ্গে তারা যাতে সব সময় হাত ধোওয়ার মত সতর্কতা মেনে চলে, কোনও ভাবেই হাত মুখে না দেয় সেদিকেও খেয়াল রাকা জরুরি। এই সময় বাইরের খাবার একদম নয়। বাচ্চাকে বাড়ির তৈরি পুষ্টিকর খাবার দিন। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। গরম দুধে মধু আর কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে হবে।

শিশুদের যদি তিনদিনের বেশি জ্বর থাকে, খাওয়া-দাওয়ায় রুচি না থাকে, ক্লান্তি, নাকবন্ধ, সর্দি এবং শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়, এবং অক্সিজেনের স্যাচুরেশন যদি ৯৫ শতাংশের নীচে নেমে যায় তাহলে কিন্তু ততক্ষনাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।এছাড়াও যদি বুকে কফ বসে, সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়, শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়, মুখ শুকিয়ে যায় এবং বাথরুম না হয় অনেকটা সময় ধরে তাহলে কিন্তু বিষয়টি মোটেই হালকা ভাবে নেবেন না।

অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে কিন্তু ডায়ারিয়া, বমি, পেটে ব্যথা এসবও কিন্তু থাকে। তবে ওমিক্রন শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই আগেভাগেই সচেতন হন। বাচ্চাকে সাবধানে রাখুন। শিশুর পুষ্টির দিকেও নজর দিন। প্রচুর করে জল খাওয়ান, ফল খাওয়ান। বাড়ির হালকা রান্না দিন। বাইরের খাবার কিন্তু একেবারেই নয়। শিশুর মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে হবে।

AIIMS Omicron Childhealth
Advertisment