ইউক্রেনের আকাশে যুদ্ধের ঘনঘটা। তড়িঘড়ি নাগরিকদের সরাচ্ছে সব দেশ। ভারতও পিছিয়ে নেই। মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটায় দিল্লিতে নামল কিয়েভ ফেরত প্রথম এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান এআই৯৪৬। প্রায় ২৪০ জন ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ইউক্রেন থেকে। ধাপে ধাপে চলবে এই উদ্ধারকাজ। যাত্রীদের মধ্যে সিংহভাগই পড়ুয়া। ভারতীয় দূতাবাস অ্যাডভাইজরি জারি করার পরই নাগরিকদের জন্য বিমান পাঠায় ভারত।
দিল্লি বিমানবন্দরে এদিন রাতে উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছিলেন আত্মীয়-পরিজনরা। তাঁদের স্বজন সুস্থভাবে দেশে ফিরতে ধরে প্রাণ এসেছে যেন তাঁদের। পড়ুয়াদের চোখে-মুখেও যেন স্বস্তির ছাপ দেশে ফিরতে পেরে। ধ্রুব মালহোত্রা নামে পঞ্চম বর্ষের মেডিসিন ছাত্র ইউক্রেনের খারকিভে পড়াশোনার জন্য গিয়েছিলেন। তিনিও দেশে ফেরার যাত্রীদের দলে ছিলেন। বলেছেন, "খারকিভ এবং কিয়েভে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু দিন দিন উত্তেজনা বাড়ছে। আমাদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছিল।"
বৃন্দাবনের বাসিন্দা ধ্রুব বলেছেন, তাঁর বন্ধুরাও দেশে ফিরছেন। কয়েক দিন মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তাঁরা ফিরবেন। বাকিরা অন্য এয়ারলাইনের টিকিট কেটেছেন। বর্তমানে এয়ার ইন্ডিয়া ২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি দুটি বিশেষ বিমান চালাবে দিল্লি-কিয়েভ রুটে। মহম্মদ আলফাজ নামে আরেক দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া বলেছেন, "ইউক্রনবাসী আতঙ্কে কাঁপছেন। পরিস্থিতি এখনও জটিল হয়নি, কিন্তু পড়ুয়ারা যথেষ্ট চিন্তিত।"
আরও পড়ুন জার্মানির মতোই রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করল ব্রিটেনও
দ্বিতীয় বর্ষের এমবিবিএস পড়ুয়া মুম্বইয়ের মহম্মদ জিশান বলেছেন, "অনলাইনে এখন ক্লাস চলবে। কিন্তু এটা আমাদের পড়াশোনায় প্রভাব ফেলবে। কারণ প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ফেরার সম্ভাবনা নেই।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের বন্ধুরাও শীঘ্রই দেশে ফিরবে। যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বিমানের টিকিটের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।"
আরও পড়ুন রাশিয়া-ইউক্রেনের দুনিয়া কাঁপানো দ্বন্দ্ব, পুতিন কি সোভিয়েত ইউনিয়নে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর?
হরবিন্দর সারোহা নামে এক মেডিক্যাল ছাত্রী দিল্লিতে ফিরে জানাচ্ছেন, "দিল্লি আসার বিমানের টিকিট এখন ৬৬ হাজার টাকা ছুঁয়েছে। যেটা সাধারণত ২৬ হাজার হয়। আমরা না হয় কোনওভাবে জোগাড় করেছি, কিন্তু অন্যদের বিরাট সমস্যা হচ্ছে। আমি যেখানে ছিলাম সেখানে বড় কোনও সমস্যা নেই আপাতত, কিন্তু সাবধানতা অবলম্বন করতেই ফিরে আসি। কিয়েভ থেকে ৪০০ কিমি দূরে থাকলেও বিমান ধরতে কোনও অসুবিধা" হয়নি।