/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/07/Derek-1.jpg)
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন
এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। ওই সিদ্ধান্ত প্রত্য়াহারের জন্য কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত 'পরস্পর বিরোধী' ও 'অগণতান্ত্রিক' বলে দাবি করেছেন ডেরেক।
চিঠিতে রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা লিখেছেন যে, 'লকডাউনে কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার স্বয়ং সেই নির্দেশিকা বিরোধী পদক্ষেপ করছে। লকডাউনে রাষ্ট্রায়ত্ব এই বিমান সংস্থার কর্মীরা কাজ করেছেন। তবে এখন সেই কর্মীদের প্রতি মোদী সরকার সহানুভূতিশীল নয়।'
সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই অগণতান্ত্রিক বলে দাবি করেছেন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তাঁর দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ, 'কেন্দ্র যে পরিকল্পনা করেছে তার থেকে অগণতান্ত্রিক কিছু হয় না। কোনও কর্মী এই প্রকল্প চায়নি। প্রক্রিয়াটি তৈরির সময় কর্মীদের স্বার্থের কথা বলার জন্যও কেউ ছিলেন না। পুরো বিষয়টিই একতরফাভাবে হয়েছে।' কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে 'অমানবিক' বলে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান তৃণমূল সাংসদ।
বিনা বেতনে ছুটির সিদ্ধান্ত 'এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের জীবন-জীবীকার অধিকারের উপর আঘাত' বলে মনে করেন ডেরেক। তাঁর মতে, 'এই পদক্ষেপ দেশের শ্রম আইনের পরিপন্থী।' একই সঙ্গে বিমান সংস্থার কর্মীদের বাকি থাকা বেতনও মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান ডেরেক।
এয়ার ইন্ডিয়ার ১৫০ কর্মী কোভিড পজিটিভ। তাসত্ত্বেও 'সংস্থার কর্মীরা দেশবাসীর প্রতি দায়বদ্ধ থেকে কাজ করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার মহামারীতে কর্মীদের ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার নীতি প্রয়োগে বিশ্বাসী।' কেন কর্মীদের বেতন সঠিক সময়ে হয় না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ধুঁকছে এয়ার ইন্ডিয়া। এবার কিছু কর্মীকে বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল বিমান সংস্থাটি। ছয় মাস থেকে দুই বছর অবধি চলতে পারে এই ছুটি। প্রয়োজনে সেটি পাঁচ বছর অবধিও বাড়তে পারে। এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ জারি করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে কেউ এই ছুটি নিতে পারে। সমস্ত স্থায়ী কর্মীদের জন্য এই প্রকল্প প্রযোজ্য হবে। এই প্রকল্প অনুযায়ী এয়ারলাইন্স যে কোনও কর্মীকে এই ছুটিতে পাঠিয়ে দিতে পারে কিছু মাপকাঠি বিচার করে। এগুলি হল পুরনো পারফরমেন্স, স্বাস্থ্য, কর্মক্ষমতা, প্রয়োজনীয়তা, দক্ষতা, আগে ছুটি নেওয়ার রেকর্ড ইত্যাদি।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠনকে মোদী সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এমনকী আরএসএস অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সংঘকেও প্রতিবাদের সামিল হওয়ার অনুরোধ করেন মমতা।
‘মহামারীর সুযোগ নিচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই সরকার একাধিক আইন বদল করেছে। নিজেদের সুবিধা মতো যা ইচ্ছে করছে। সরকারের নামে স্বৈরাচার চলছে। দেশে শ্রম আইন রয়েছে। সব কিছু বুলডোজ করে কেন্দ্রীয় সরকার কীভাবে কর্মীদের চাকরি ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের জীবন বিপন্ন করে তুলতে পারে?’ প্রশ্ন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন