মায়নামারের সেনাবাহিনী মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি গ্রামে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায়, এই হামলার ঘটনায় শিশুসহ ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে্ন বলেই খবর। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে বিমান হামলায় নিহত সকলেই সেদেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক কার্যালয় উদ্বোধনের জন্য সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরে জড়ো হয়েছিল।
সেখানেই ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় মায়নামার সেনা। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই ঘটনাকে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর ‘নারকীয় হত্যার’ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি প্রশাসনিক অফিস উদ্বোধনের জন্য বাসিন্দারা জড়ো হওয়ার সময় এই বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। সাগাইং এলাকা-ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এই হামলা চালানো হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ৮টার নাগাদ একটি ফাইটার জেট থেকে প্রায় ১৫০ জন মানুষের ভিড়ে সরাসরি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশুও। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে স্থানীয়ভাবে গঠিত সরকারবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও অন্যান্য বিরোধী সংগঠনের নেতারা রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রাথমিক হামলার প্রায় আধ ঘণ্টা পর একটি হেলিকপ্টার থেকে ঘটনাস্থল লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলিও ছোঁড়া হয়। মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মায়নামার সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, "আমরা সেখানে হামলা করেছি যেখানে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের একটি প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।" পিপলস ডিফেন্স ফোর্স এক সশস্ত্র বিরোধী দল, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি, সামরিক অভ্যুত্থানের পর মায়নামারের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির অন্যতম নেত্রী অং সান সু চি অন্যান্য নেতাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময় থেকে সেনা অভিযানে ৩ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন বলেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।