অজিত দোভাল- এই নামটা আজ একটু খোঁজখবর রাখা প্রত্যেক ভারতীয়র কাছেই বেশ পরিচিত। অতীতের কীর্তি বাদ রাখলেও মোদী সরকারের জমানায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে অনায়াসেই যিনি একশোয় নব্বই শতাংশ নম্বর পেতে পারেন। একথা স্বীকার করবেন যে কেউ। যাঁর কাজকর্ম মানে নিরাপত্তার চাদরের অভ্যন্তরে চলা কিছু। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে গত আট বছরে তেমন একটা প্রকাশ্যে দেখাও যায়নি। যখন গিয়েছে, হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। অথবা, বড় কোনও ঘটনার ক্ষেত্রে। সেই দোভালকেই এবার দেখা গেল নয়াদিল্লিতে, বই প্রকাশের এক অনুষ্ঠানে। আচমকা বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে কেন? স্বভাবতই প্রশ্নটা উঠল।
দোভাল নিজেই পরিষ্কার করলেন উত্তরটা। জানালেন, তিনি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন, কারণ তাঁর কিছু বলার আছে। আর, সেটা হল- ভারত সম্পর্কে তাঁর ধারণা। দোভাল একথা জানানোর পর অনেকেই ভেবেছিলেন, বোধহয় দেশের নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছু বলবেন। কিন্তু, না। দোভালকে বলতে শোনা গেল অন্য কথা। তিনি বক্তব্যে ভারতকে এক সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন। আর, এতেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, কেন দোভাল এমন ধরনের বক্তব্য রাখলেন? তাহলে এবার কি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অন্য ভূমিকায় দেখা যাবে? সেই ক্ষেত্রই তিনি প্রস্তুত করলেন নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে?
প্রশ্নটা ওঠা অবান্তর নয়। কারণ, দোভালের আগে ভারত চার জন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পেয়েছে। তার মধ্যে ব্রজেশ মিশ্র, জেএন দীক্ষিত আর শিবশংকর মেনন ছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক। দীক্ষিত আর মেনন ছিলেন বিদেশসচিব। আর, ব্রজেশ মিশ্র রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। পরবর্তীতে প্রধান সচিব হয়েছিলেন। চতুর্থ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এমকে নারায়ণন কিন্তু ছিলেন আইপিএস। দোভালের মতই প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান।
আরও পড়ুন- ‘নিরপেক্ষ নয় কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি’, সমস্যা সুরাহায় নয়া দাওয়াই মমতার
পরবর্তীতে এই নারায়ণনই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়েছিলেন। বাজপেয়ী তাঁর জমানায় একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে নিয়েই কাটিয়েছেন। তিনি হলেন ব্রজেশ মিশ্র। তাঁর পরে ক্ষমতায় এসে মনমোহন সিং তাঁর ১০ বছরের শাসনে তিন জন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে নিয়ে কাটিয়েছেন। তার মধ্যে নারায়ণন সবচেয়ে বেশি, ৫ বছর ২০ দিন পদে ছিলেন। দোভাল অবশ্য তাঁর সব পূর্বসূরিদের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর আট বছর ৩০ মে পূর্ণ হবে। আর, এই সব পরিসংখ্যানেই প্রশ্ন জাগছে, এর পরও কি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাকবেন দোভাল? সেই প্রশ্নকে যেন জল্পনার রূপ দিল বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দোভালের বক্তব্য।
Read full story in English