'গালওয়ান উপত্যকায় সীমান্তের পশ্চিম দিকে কী হয়েছে সেটা স্পষ্ট। চিন নিজেদের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব আগের মতই রক্ষা করবে ও সীমান্তে শান্তি-স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।'
'গালওয়ান উপত্যকায় সীমান্তের পশ্চিম দিকে কী হয়েছে সেটা স্পষ্ট। চিন নিজেদের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব আগের মতই রক্ষা করবে ও সীমান্তে শান্তি-স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।'
রবিবার ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রীর ফোনালাপের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সোমবারই লাল ফৌজ পিছু হটতে শুরু করেছে। ভারতীয় সেনাকেও সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রয়োজনীয় বলে ভারত-চিন দু'পক্ষই ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে। সেনা সরানোর পাশাপাশি গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ থেকে চিন যাবতীয় অবৈধ পরিকাঠামো সরিয়ে নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৫ ও ১৭-ও খালি করতে শুরু করেছে চিনা সেনা। তবে, প্যাংগংয়ের ফিঙ্গার ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত এলাকায় এখনও লাল ফৌজের দখলে। এই বিষয়টিই ভাবাচ্ছে দিল্লিকে।
Advertisment
সোমবার চিনা বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'ভারত-চিন সেনা পর্যায় ও বিশেষ প্রতিনিধিদের বৈঠকের অগ্রগতিকে স্বাগত। দু'পক্ষই নিয়ন্ত্রণরেখার কাছ থেকে সেনা সরাতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত করতে হবে।' তবে গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে পুরোপুরি সুর নরমের ইঙ্গিত মেলেনি চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়েই ই-য়ের কথায়। তিনি বলেছেন, 'গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম দিকে কী হয়েছে সেটা স্পষ্ট। চিন নিজেদের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব আগের মতই রক্ষা করবে ও সীমান্তে শান্তি-স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।'
এই মন্তব্যের অবশ্য কোনও প্রতিবাদ করেনি দিল্লি। বেজিংয়ের সঙ্গে সমঝোতা যাতে নষ্ট না হয় তার ইঙ্গিত হিসাবেই ভারতের এই অবস্থান বলে মনে করা হচ্ছে।
Advertisment
একই সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, 'উভয় দেশের পারস্পরিক আস্থাবর্ধক বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করেই সীমান্ত নিয়ে বিশেষ প্রতিনিধি পর্য়ায়ের বৈঠক চলতে পারে। সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা দুই দেশের স্বার্থেই খুব জরুরি।'
ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'ইন্দো-চিন সীমান্তের পশ্চিম অংশের অশান্তি নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রীর কথা বয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দুই পক্ষই সেনা সরাতে রাজি হয়েছে। ভবিষ্যতে শান্তি-স্থিতাবস্থা ব্যাহত হতে পারে এমন কার্যকলাপ থেকে দুই দেশই বিরত থাকবে।' ভারত-চিনের বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে যে, 'মতভেদ যেন বিরোধে পরিণত না হয়।'
গালওয়ান সংঘর্ষের পরই ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। তাতে কার্যত চাপে বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'উভয় পক্ষের উচিত কৌশলগত সিদ্ধান্ত মেনে চলা। দেখতে হবে যাতে একে অপর পক্ষের বিরোধের কারণ না হয়ে ওঠে।' এক্ষেত্রে ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে চিনা বিবৃতিতে। দু'দেশের সম্পর্ক যাতে বৃহত্তর পর্যায়ে তুলে ধরা যায় তার প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব আরোপের কথা বলা হয়েছে। তবে, চিনা সেনার অপসারণকে কূটনৈতিক জয় বলেই দেখছে ভারত।