ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়! গুজরাটের ৬ জেলায় ইতিমধ্যেই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আরব সাগরে সৃষ্ট বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ইতিমধ্যেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই ঘুর্ণিঝড় ১৫ জুনের মধ্যে গুজরাটের কচ্ছ জেলা এবং পাকিস্তানের করাচির মধ্যে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ল্যাণ্ডফলের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ১২৫-১৩৫ কিলোমিটার।
প্রবল শক্তিশালী এই সাইক্লোনের জেরে গুজরাটের উপকূল বিভাগে কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) সোমবার থানে, রায়গড়, মুম্বই এবং পালঘর সহ মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি এলাকায় ৪৫-৫৫ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় শিক্তি বাড়িয়ে ইতিমধ্যে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুম্বইতেও আজ সকাল থেকেই আবহাওয়ার বদল লক্ষ্য করা গিয়েছে। রবিবার রাতেও মুম্বই ও মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু অংশে বৃষ্টি হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এয়ার ইন্ডিয়ার বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ১৫ জুন গুজরাটের কচ্ছ জেলা এবং পাকিস্তানের করাচির মধ্যে 'ল্যান্ডফল' করতে পারে বলেই সতর্কবার্তায় জানিয়েছে আইএমডি। ইতিমধ্যেই ঘুর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় থানে, মুম্বই এবং পালঘর সহ মহারাষ্ট্রের বড় অংশে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। জেলেদের ১১-১৪ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মুম্বই ছাড়াও, আগামী পাঁচ দিন মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক অংশে বিচ্ছিন্ন থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রবি ও সোমবার অসমেও জারি করা হয়েছে 'হলুদ সতর্কতা'। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার 'কমলা সতর্কতা' জারি করা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘন্টা পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং পরবর্তী তিন দিনের জন্য ভারী থেকে অতভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের বিচ্ছিন্ন জায়গায় শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১৫ই জুন রাজস্থানের বিচ্ছিন্ন অংশে ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমডি ১১-১৫ জুন তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির কিছু অংশে বজ্রপাতের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুজরাট সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে এক বৈঠক করেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং কোস্টগার্ডের পর্যাপ্ত সংখ্যক দলকে ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল রবিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা শাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশন দেন। ১৫ জুন গুজরাটের কচ্ছ, দ্বারকা, জামনগর, পোরবন্দর, রাজকোট, মোরবি এবং জুনাগড় জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আইএমডি রবিবার সকালে জারি করা একটি পরামর্শে বলেছে যে সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ উপকূলে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে দমকা হাওয়া বইবে।