কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর বৃহস্পতিবারের প্রাণঘাতী হামলা নিয়ে আপত্তিজনক টুইট করে শুক্রবার পুলিশি পদক্ষেপের ফেরে পড়ল বাসিম হিলাল নামে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র। পুলওয়ামার ওই বিধ্বংসী হামলায় প্রাণ হারান কমপক্ষে ৪০ জন জওয়ান। ঘটনার দায় স্বীকার করে নেয় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-এ-মহম্মদ।
আদতে কাশ্মীরেরই বাসিন্দা হিলালের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩(ক) ধারা (বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ উৎপন্ন করা) এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৭(ক) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে তাকে।
আরও পড়ুন: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার প্রমাণ নেই, জানাল পুলিশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক ওমর সেলিম পীরজাদা সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, "আমরা (হিলালের) অত্যন্ত আপত্তিজনক ওই টুইটের কথা জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গেই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়, এবং তাকে সাসপেন্ড করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। (এই ধরনের কার্যকলাপের প্রতি) আমাদের কোনো সহানুভূতি নেই।"
উল্লেখ্য, বর্তমানে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হিলাল।
কাশ্মীর উপত্যকায় আজ পর্যন্ত দেখা সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক একক জঙ্গী হানায় দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় বিস্ফোরক বোঝাই একটি টাটা স্কর্পিও চালিয়ে সিআরপিএফ-এর বাসে ধাক্কা মারে এক সুইসাইড বম্বার। জঙ্গী সংগঠন জইশ-এ-মহম্মদ জানায় যে আত্মঘাতী ২০ বছর বয়সী ওই জঙ্গী পুলওয়ামা জেলারই বাসিন্দা। আক্রান্ত বাসে ছিলেন ৪২ জন জওয়ান, এবং এই বাসটি ছিল ৭৮ টি গাড়ি-বিশিষ্ট একটি কনভয়ের অংশ, যেটি ২,৫৪৭ জন সিআরপিএফ কর্মীকে নিয়ে যাচ্ছিল জম্মু থেকে কাশ্মীর। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছুটি কাটিয়ে শ্রীনগরে নিজেদের ডিউটিতে ফিরছিলেন।
আরও পড়ুন: কুলভূষণ যাদবের ফাঁসি: কী করবে পাকিস্তান?
শুক্রবার কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করে ভারত সরকার। শুক্রবার এমনটাই জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কাশ্মীরে হামলা নিয়ে এদিন সকালে রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সেই বৈঠকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই কড়া পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা যায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এদিন জেটলি বলেন, "পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাবে বিদেশমন্ত্রক।" কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, "যারা হামলা চালিয়েছে এবং যারা এই হামলায় মদত দিয়েছে, তাদের বিরাট মূল্য দিতে হবে।"