এবার রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের ভোট কাটতে আসরে হাজির সর্বভারতীয় জনসংঘ। রাজ্যে প্রায় ১৭০টি আসনে জনসংঘ প্রার্থী দিচ্ছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, "আড়াই মাস আগে দল যাত্রা শুরু করেছে। এই দলে যোগ দিচ্ছেন অনেকেই। বিশেষত বিজেপি থেকে অনেকেই এসেছেন। আমি নিজে আরএসএস করতাম। ব্যারাকপুর অঞ্চলের সদ্ভাবনা প্রমুখ ছিলাম।" সুব্রতবাবু নিজেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কিত নাতি বলে দাবি করে বলেছেন, "দীনদয়াল উপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যরাও এই দলে যোগ দেবেন।"
আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "বিজেপি থেকে এই দলে এসে অনেকেই প্রার্থী হচ্ছেন। বিজেপি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নীতি থেকে বিচ্যুত হওয়ায় আমরা নতুন দল গঠন করেছি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নীতি-আদর্শ মেনে চলব। সর্বভারতীয় স্তরেও অনেকেই যোগাযোগ করছেন।" তাঁর বক্তব্য, আরএসএস করতে গিয়ে সরকারি চাকরিও চলে গিয়েছে।
বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জনসংঘের কোর কমিটির সদস্য। তিনি এই নির্বাচনে বাঁকুড়া, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। চন্দ্রনাথবাবু বলেন, "তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলাম বাংলার উন্নয়নের লক্ষ্যে। কিন্তু বিজেপির যা অবস্থা সেই দলে থাকা দায়। আর তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। তাই নতুন বাংলা গড়তে শ্যামাপ্রসাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জনসংঘে যোগ দিয়েছি।"
রাজ্যে প্রায় ১৭০ কেন্দ্রে প্রার্থী দিলেও জয়ের আশা রয়েছে কোনও কেন্দ্রে? সুব্রতবাবু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাাংলাকে বলেন, "কুলতলি, জগদ্দল, কাঁচরাপাড়া, পূর্বস্থলী উত্তরে ভাল ফল করবে দল। আদি বিজেপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন অনেকেই।" ভোটের খরচ যোগাবেন কী করে? সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের দল গঠন হয়েছে মাত্র আড়াই মাস। আমাদের সংগঠনে অর্থের সংস্থান নেই। প্রার্থীরা নিজেরাই অর্থ যোগার করবে।"
তবে শুধু এরাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নয়। দলের লক্ষ্য যে সর্বভারতীয় সেকথা জানিয়েছেন সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, "দিল্লি, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, আসাম, ত্রিপুরায় সংগঠন হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যোগী ঘনিষ্ট আমাদের দলে সভাপতি হয়েছেন। আগামী জুন-জুলাইতে মোদী সরকারের ২৫ জন সাংসদ যোগ দিতে পারেন তাঁদের দলে, দাবি সুব্রতবাবুর।
যদিও বাংলার ভোট ময়দানে নতুন এই দলকে পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর কথায়, 'যাঁরা বলছেন আমাদের দল ছেড়ে সর্বভারতীয় জনসংঘ তৈরি করেছেন তাঁদের কোনও দিনই বিজেপি করতে দেখিনি। এর পিছনে পিকে-র কৌশল রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে নতুন এই দল ভোটে বিজেপির কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন