Advertisment

খারগোনে আশার আলো, 'ধর্মের চেয়ে আগে আমাদের বন্ধুত্ব', বন্ধু সাদিকের পাশে সুমিত

গত রবিবার রাম নবমীর মিছিল বেরনোর পর মধ্যপ্রদেশের খারগোনের একাধিক জায়গায় গন্ডগোল শুরু হয়। বাড়ি-দোকানে চলে বেপরোয়া ভাঙচুর।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Also in Madhyapradesh's Khargone, a flicker of hope, ‘Our friendship is beyond religion’

মধ্যপ্রদেশের খারগোন।

রবিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ ২৬ বছরের সুমিত চন্দোকের মোবাইল ফোন বেজে উঠেছিল। তাঁর বন্ধু সাদিক খান সাহায্য চেয়ে ফোন করেছিলেন সুমিতকে। মধ্যপ্রদেশের খারগোনের সঞ্জয় নগরে সুমিতের বাড়ির ৫০০ মিটার দূরত্বেই থাকেন সাদিক। ওই দিন সন্ধেয় একদল উন্মত্ত জনতা সাদিক খানের বাড়ি লক্ষ্য করে অনবরত পাথর ছুঁড়ছিল। সাহায্যের জন্য সবার আগে বন্ধু সুমিতের কাথাই মাথায় আসে সাদিকের। বন্ধুকে ফোন করে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলেন সাদিক।

Advertisment

সুমিত চান্দোকে পেশিজনিত রোগে ভুগছেন। গত রবিবার সন্ধেয় বন্ধু সাদিকের ফোন পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। শারীরিক সমস্যার কারণে নিজে যেতে না পরালেও তড়িঘড়ি বন্ধু সাদিককে সাহায্য করতে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ছোট ভাই অমিতকে। এপ্রসঙ্গে সুমিত বলেন, ''আমার ভাই যখন সেখানে পৌঁছোয় তখন সাদিকের বাড়ি জ্বলছিল। অমিত তাঁদের বাড়ির বাচ্চাদের সঞ্জয় নগরের আরও ভিতরে তাঁদেরই আত্মীয়দের বাড়িতে নিয়ে যায়। ওঁদের একটি বাইকে দাঙ্গাকারীরা আগুন দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সাদিকের পরিবারকে বাঁচাতে যাওয়ায় দাঙ্গাবাজরা অমিতকেও মারধর করেছিল।''

এদিকে এখনও পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের খারগোনে হিংসার জেরে ৩৩টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। মোট ১২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে গত রবিবার রামনবমীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষের সময় খারগোনের সঞ্জয় নগর-সহ চারটি এলাকায় ১৬টি বাড়ি এবং ৩৪টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। খারগোনের এই আবহে আজ সুমিত চান্দোকে এবং সাদিক খানের এই গল্প আশার আলো দেখাচ্ছে। হিন্দু-মুসলিম সৌভ্রাতৃত্বের কথা মনে করাচ্ছে এই দুই বন্ধুর গল্প।

আরও পড়ুন- Explained: বর্ণান্ধতা কী, পরিণত বয়সেও কি এই সমস্যায় পড়তে পারেন?

চান্দোকে বলেন, ''সাদিকদের বাঁচাতে আমি আমার ভাইকে পাঠানোর আগে দু'বার ভাবিনি। কারণ, আমার যখন নেক্রোসিসের অপারেশন হচ্ছিল তখন এই সাদিকই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার তাঁর প্রয়োজনে তাঁকে সাহায্য করা সঠিক বলে মনে হয়েছিল।'' উল্লেখ্য, রবিবারের হিংসার ঘটনায় সাদিক খানের ১৪ জনের যৌথ পরিবার শুধু গৃহহীনই হয়নি, সংঘর্ষের জেরে আগুন লাগানোর ঘটনায় তাঁদের প্রায় সব সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাদিক খানের বড় দাদা দিলওয়ার খান বলেন, ''প্রথমে পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওরা আমাদের বাড়ির সামনে চলে আসে। ওদের বলতে শুনেছি, 'ইয়ে খান কা ঘর হ্যায়, ফোড়ো'। ওরা আমাদের বাড়ির বাইরে লেখা নেমপ্লেট পড়েছিল। আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। অমিত আমাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলটি সরিয়ে নিয়েছিল। শুধু ওটাই এখন ঠিকঠাক আছে। অমিতই আমাদের বাচ্চাদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। ও সাহায্য করায় ওর ওপরেও হামলা হয়েছিল।''

Read full story in English

Madhya Pradesh Violence Ram Navami Ram Navami violence
Advertisment