পাক জঙ্গি হামলার সম্ভাবনার খবর পেয়ে সাত তাড়াতাড়ি অমরনাথ যাত্রা বাতিল করেছে কেন্দ্র। সন্ত্রাসী হামলার আতঙ্কে রীতিমত ত্রস্ত গোটা উপত্যকা। শুরু হয়েছে কাশ্মীর থেকে ফেরার হিড়িকও। বিগত দু'দিনে বিমান ভাড়া একলাফে বেড়ে ১৫- ২৫ হাজার পর্যন্ত উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া শ্রীনগরগামী এবং শ্রীনগর থেকে ছাড়বে এমন সব বিমানের ভাড়ার ঊর্ধসীমা ৯৫০০ টাকা বেঁধে দিল।
"বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত শ্রীনগর থেকে ছাড়া এবং শ্রীনগরগামী সমস্ত বিমানের ভাড়া ৯৫০০ টাকা করা হল", টুইট করে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
জঙ্গি হামলার আতঙ্কে শুনশান কাশ্মীর, পড়ুয়াদের হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ
পাক জঙ্গি হামলার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই জম্মু কাশ্মীর সরকারের তরফে তীর্থযাত্রীদের উপত্যকা ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জম্মু-কাশ্মীরে। শ্রীনগর থেকে ফেরার বিমানগুলি প্রায় পুরো ভর্তি। যে কটি আসন বাকি আছে, তা যেন সোনার দামে বিকোচ্ছ।
শনি ও রবিবারে শ্রীনগর থেকে ফেরার বিমানগুলি প্রায় সম্পূর্ণ ভর্তি। সন্ত্রাসবাদী হামলার ভয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাশ্মীর ছাড়তে চাইছেন পর্যটকরা। সামান্য যে কয়েকটি আসন এখনও খালি আছে, সেগুলির দাম চড়েছে প্রায় রকেটের গতিতে। রবিবার শ্রীনগর থেকে দিল্লি আসার বিমানভাড়া ১৫,৫০০টাকা থেকে শুরু হয়ে ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। শ্রীনগর থেকে মুম্বইয়ের বিমানভাড়া ১৬,৭০০ টাকা থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। শ্রীনগরগামী যেকোনোও বিমানে টিকিট বাতিল করলে ক্যানসেলেশন চার্জ মুকুব করা হচ্ছিল গত দু'দিন ধরেই।
কাশ্মীরে সন্ত্রাস হামলার আশঙ্কা প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অতিরিক্ত ডিজিপি মুনির খান বলেছেন, ‘‘তীর্থযাত্রাকে টার্গেট করে বড়সড় জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। পর্যটকদের টার্গেট করা হতে পারে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’’।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসের আশঙ্কা, নজিরবিহীন ভাবে বাতিল অমরনাথ যাত্রা
এদিকে, সরকারি নির্দেশিকার পরই কাশ্মীরজুড়ে আতঙ্ক গ্রাস করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ার আশঙ্কায় পেট্রোল পাম্প, মুদির দোকান থেকে এটিএম, সর্বত্রই মানুষের ভিড়। বিমান বাতিলের ভাড়া মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান সংস্থাগুলি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১০০ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ২৮ জুলাই রেলের ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনারের পক্ষ থেকে আগামী ৪ মাসের জন্য রেশন মজুত রাখতে আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাশ্মীরে না আনার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রশাসনের এই তৎপরতা দেখে জোর জল্পনা শুরু হয়। ৩৫ এ ধারা খারিজ হতে পারে বলে জোর জল্পনা চলে রাজনৈতিক মহলে।
"অসামরিক বিমান মন্ত্রক এবং ডিরেক্টোরেট জেনেরাল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন বিভাগ সরকারের পরামর্শ মেনেই যাত্রী নিরাপত্তা এবং তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে", জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
Read the full story in English