উত্তোরত্তর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়াবহ অবস্থা গুজরাতের। হাসপাতালে বেড সঙ্কুলান হওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক কোভিড রোগীকে। এমনই এক অবস্থার সাক্ষী থাকল আহমেদাবাদের সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালের বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স। প্রতিটিতেই অপেক্ষা করছেন করোনা রোগীরা। পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে গুজরাতের আমদাবাদের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতালে এমনই দৃশ্য দেখা গেল সোমবার।
আমদাবাদের এই সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ১ হাজার ২০০। কিন্তু তার পরেও শয্যার অভাবে এক প্রকার বাধ্য হয়েই হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্সে অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের। রোগীর অবস্থার যাতে অবনতি না হয় তাই অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরেই তাঁদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
দেশের যে ১০টি রাজ্যে করোনার সংক্রমণ উদ্বেগের ছবি তৈরি করেছে তার মধ্যে গুজরাত রয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে ৭ হাজার ১৬৫ জনই আমদাবাদের। সোমবারই রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের।
এদিকে, অক্সিজেনের অভাবে ৭ করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হল মহারাষ্ট্রে। সে রাজ্যের ভাসাই এলাকায় নালাসোপারার একটি হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, অক্সিজেনের জোগানে কোনও ঘাটতি নেই। অন্য জটিল রোগ বা কোমর্বিডিটি থাকার কারণেই আক্রান্তদের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃতদের আত্মীয়দের দাবি, ‘করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলাকালীনই হঠাৎ অক্সিজেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।‘ মহারাষ্ট্রে লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর।
এই ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরেও। রোগীর আত্মীয়রা সব দায় চাপিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক অবশ্য দাবি করেছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মৃতদের একাধিক জটিল রোগ ছিল, সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক ক্ষিতীশ ঠাকুর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভাসাই তালুকে অক্সিজেনের আকাল দেখা যাচ্ছে। এই তহসিল এলাকায় যাতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করা হয়, সে দিকে নজর দিক সরকার।’
বিজেপি-র বিধায়ক ও মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধী দলনেতা প্রবীণ দারেকর গোটা ঘটনার জন্য উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে দোষ দিয়েছেন। পাশাপাশি বিজেপি-র তরফ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।