তাইওয়ানে ন্যান্সি পেলোসি পা দিলে বড় মূল্য দিতে হবে আমেরিকারকে, চিনের এই হুমকিকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই মার্কিন সংসদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গতকাল রাত্রে তাইওয়ানের মাটিতে পা দেন। শুধু তাই নয় তাইওয়ানের পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন। আর তাতেই নতুন করে শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছে চিন।
তাইওয়ানে পা দিয়েই এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “তাইওয়ানের গণতন্ত্রের পাশে থাকতে আমেরিকা সব সময়ই প্রস্তুত, তাইওয়ানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় সেদেশের পাশে থাকার বার্তাও দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা-সহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর ওপরের জোর দেওয়া হবে”।
যদিও পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। তার এই সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছে চিন। পাশাপাশি তাইওয়ানের আকাশে নিজেদের সামরিক মহড়ার ছবিও ধরা পড়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তাইওয়ান লাগোয়া মূল ভূখণ্ডের সীমান্ত এলাকা এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে চিন। দীর্ঘদিন ধরেই স্বশাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে আসছে বেজিং।
মার্কিন প্রতিনিধির তাইওয়ান সফর নিয়ে মুখ খুলেছে চিনের বিদেশমন্ত্রকও। যদিও চিনের এই হুমকিকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ আমেরিকা। বুধবার তাইওয়ানের পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন সংসদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৩ বছর আগে তাইওয়ানের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। “তাইওয়ান একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক দেশ। বিশ্বের কাছে তাইওয়ান প্রমাণ করেছে যে আশা, সাহস এবং সংকল্প চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব। আগের চেয়েও এখন তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আজকে আমি সেই বার্তাই নিয়ে এসেছি”।
আরও পড়ুন: <পোশাক তৈরির কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, গ্যাস লিক করে অসুস্থ কমপক্ষে ৫০>
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের উপস্থিতিতে একথা বলেন পেলোসি। কয়েক সপ্তাহের অনিশ্চয়তার পর মঙ্গলবারই তাইওয়ান সফরে আসেন পেলোসি। পেলোসির এই সফর ঘিরে নতুন করে চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। তাতে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ করেনি ওয়াশিংটন।
পেলোসি তাইওয়ানে অবতরণ করেন। যিনি ২৫ বছরে প্রথম মার্কিন সংসদের স্পিকার হিসেবে তাইওয়ানে পা রেখেছেন। তাইওয়ান পার্লামেন্টে এদিন ভাষণ দেওয়ার সময় পেলোসি আরও বলেন, তাইওয়ানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদান বাড়ানোই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
এদিকে সূত্রের খবর আজই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই দেখা করতে পারেন পেলোসি। এদিকে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ানের সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করল চিন। বেশ কিছু পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চিন। তাইওয়ানের রপ্তানির প্রায় ৩০ শতাংশই আসে চিন থেকে। পণ্য সামগ্রী আমদানির নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাইওয়ানকে আরও কোণঠাসা করার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগোল চিন।