Advertisment

দেশে করোনার এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যে কেন রাজ্যগুলিকে টিকার জোগান বন্ধ করতে চলেছে কেন্দ্র?

২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় টিকাদান অভিযান

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
india covid 19 cases,coronavirus in india"

২০২১ সালের জানুয়ারিতে কোভিড -19 টিকাদান কর্মসূচী অভিযান চালু হওয়ার প্রায় ২৭ মাস পরে, কেন্দ্র এপ্রিল থেকে রাজ্যগুলিকে কোভিড টিকা ডোজ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এবং রাজ্যগুলিকে সরাসরি নির্মাতাদের কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনমত ভ্যাকসিনের ডোজ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।  বুধবারই এই তথ্য সামনে এসেছে। কেন এমন সিদ্ধান্ত? কর্মকর্তাদের মতে, কোভিড টিকা প্রচুর পরিমাণে ক্রয়ের সঙ্গে সঙ্গে অপচয় রোধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারণ সিংহভাগ মানুষই কোভিডের টিকা নিয়েছেন।

Advertisment

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে "রাজ্যগুলিকে ইতিমধ্যেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়াই সরাসরি প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে সরাসরি প্রয়োজনীয় কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ সংগ্রহ করতে পারেন,"।  

কেন্দ্র ১২ বছরের বেশি বয়সিদের সকলকে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী, স্বাস্থ্যকর্মী বা ফ্রন্টলাইন কর্মীদের বিনামূল্যে রাজ্যগুলিকে বুস্টার ডোজ সরবরাহ করেছে। পাশাপাশি ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদের জন্য বিনামূল্যে বুস্টার ডোজ ১৫ জুলাই থেকে ৭৫ দিনের জন্য কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে সরবরাহ করেছে।

এবিষয়ে হরিয়ানা প্রশাসনের একজন আধিকারিক বলেছেন, “এই মাসের শুরুতে একটি ভিডিও-কনফারেন্স মিটিংয়ে আমাদের জানানো হয়েছিল যে কেন্দ্র আর কোনও ভ্যাকসিনের ডোজ দেবে না। তাই রাজ্য সরকার প্রয়োজন অনুসারে ভ্যাকসিন ক্রয়ের পরিকল্পনা করছে। তিনটি ভ্যাকসিন Covishield, Covaxin এবং Corbevax। রাজ্য সরকার প্রয়োজন মত ক্রয় করবে"।

দিল্লির এক শীর্ষ আধিকারিক বলেছেন, “আমাদের কাছে স্টক থাকা ভ্যাকসিনের ডোজের মেয়াদ মার্চের শেষের দিকে শেষ হয়ে যায়। গত মাসের মধ্যেই স্টকে থাকা ভ্যাকসিন আমরা কাজে লাগিয়েছি। এখন সরকারি কেন্দ্রে কোন ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এই মাসের শুরুতে কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য সরকার নিজেই ভ্যাকসিন সংগ্রহ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে”।

তিনি আরও বলেন, কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ডের উৎপাদন "কম চাহিদার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে"। ওই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা টিকা সংগ্রহ করলেও মানুষ টিকা নিতে এগিয়ে আসছে না। এই কারণেই কেন্দ্র বিপূল পরিমাণ ভ্যাকসিন ক্রয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে”।

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার সংখ্যা কমেছে। সরকারের CoWIN পোর্টালের তথ্য অনুসারে, মার্চ মাসে এক সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৪৬০০০ টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সেই সংখ্যা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজারের কিছু বেশি, দ্বিতীয় সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে তিন হাজারের দোড়গোড়ায় এবং তৃতীয় সপ্তাহে ২৬৬৪-এ নেমে এসেছে।

ছত্তিশগড়ের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, “সরকার আর ডোজ সরবরাহ করছে না। আমরা এখন ৫০ হাজার টিকার ডোজ চেয়েছি। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যজুড়ে বাড়ছে। আমি কেন্দ্রকে দোষ দিই না, কারণ লোকেরা টিকা না নেওয়ার ফলে সেগুলি নষ্ট হচ্ছিল”।

আধিকারিক যোগ করেছেন, “রাজ্যগুলি ডোজ কিনতে বাড়তি বিনিয়োগ করত হবে। ৫০ হাজার ডোজ কিনতে রাজ্যসরকারের খরচ হবে ১ কোটি টাকা। অনেক রাজ্যের পক্ষে এই বাড়তি খরচ বহন করা সম্ভব নাও হতে পারে”।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের এক সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, “খুব কম লোকই আছে যারা ভ্যাকসিনের ডোজ নেন নি। যারা সেই সময় টিকা নেন নি, কেবল তাদের টিকা দেওয়ার জন্য, কিন্তু প্রচুর পরিমাণে টিকার ডোজ কেনার কোন মানেই হয়না”। তারা বেসরকারি জায়গা থেকে টিকার ডোজ সংগ্রহ করতে পারেন”।  

COVID-19
Advertisment