‘সুশাসনের চাবিকাঠি হল জনকেন্দ্রিক উন্নয়ন নীতি। আমাদের পরিস্থিতি এবং দেশের সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে আমাদের মডেল তৈরি করতে হবে। মডেল এমন হওয়া উচিত যাতে সারিতে থাকা শেষ ব্যক্তির কাছেও তা পৌঁছায়। দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ, সংবেদনশীল, উদ্ভাবনী এবং স্থিতিশীল মডেল দেশের জন্য আদর্শ। দুই থেকে দশ কোটি জনসংখ্যার দেশের মডেলের সঙ্গে ভারতের মত বৃহত্তর জনসংখ্যার দেশের মডেলের কোন তুলনাই চলেনা’…. বার্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আয়োজিত 'এক্সিলেন্স ইন গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ডস' অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ী জেলা শাসকদের অভিনন্দন জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিত শাহ সতর্ক করে বলেন, ‘এই স্বীকৃতি যেন তাদের আত্মতুষ্টির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়, আগামীর প্রেরণা হিসাবে যাতে এই স্বীকৃতি তাঁদের সকলকে অনুপ্রেরণা জোগায়’। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান বিবেক গোয়েঙ্কা এই অনুষ্ঠানে বলেন, গণতন্ত্রে জনসেবা মানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নয়। এই পুরস্কার তাঁদের সকলের কাজের স্বীকৃতি যারা গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন”।
তার বক্তৃতায় অমিত শাহ বলেন, ‘সুশাসন উন্নয়ন ও অগ্রগতির চাবিকাঠি। ভারতীয় সংবিধান, যা সকলের জন্য সমান সুযোগ এবং সমান অগ্রগতির কথা ভাবে। সেটা তখনই সফল হতে পারে যখন জেলা স্তরে সুশাসন বজায় রাখা সম্ভব হয়’। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আরও বলেন, ‘রামনাথ গোয়েঙ্কার সময় থেকে এমনকি ব্রিটিশ রাজের সময় থেকে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তার শক্তিশালী সাংবাদিকতার জন্য পরিচিত। সরকারের ভুল বা ত্রুটিগুলো তুলে ধরা সমাজের পক্ষে ভাল। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভাল কাজের স্বীকৃতি দিলে সমাজ অনুপ্রাণিত হবে এবং যারা ভালো কাজ করবে তাঁরাও উৎসাহিত হবেন। জরুরী অবস্থার সময় ‘রামনাথ গোয়েঙ্কা এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের’ দেখানো পথের কথা উল্লেখ করে শাহ বলেন, ব্যবসা এবং সাংবাদিকতাকে একে অপরের থেকে দূরে রাখার প্রথম প্রচেষ্টা করেন ‘রামনাথ গোয়েঙ্কা’ । তাই তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। যা দেশের স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকর এমন বিষয়কে সামনে তুলে ধরতে কখনও তিনি কখনো দ্বিধাবোধ করেননি’।
তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার জনগণকে খুশি করার জন্য নীতি তৈরি করে না। এটি এমনই যা জনগণের জন্য কল্যানকর। এই প্রসঙ্গে অমিত শাহ ,জিএসটির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘আমরা যখন এটি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি তখন কিছু লোক এর বিরোধিতা করেছিল। আমরা যখন ডিবিটি (ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার) নিয়ে এসেছি, তখন এরও বিরোধিতা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সরকার সব সময়ই ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির পরিবর্তে সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধানের লক্ষ্য রাখে’।
শাহ বলেন, ‘আমরা বলছি না যে আমরা এই বছর প্রচুর টয়লেট তৈরি করব। আমাদের লক্ষ্য ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি বাড়িতে একটি করে টয়লেট থাকবে। সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দুর্নীতিমুক্ত শাসন, উন্নয়নমুখী নীতি, বিনিয়োগবান্ধব এজেন্ডা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এনেছে’।
তিনি জেলাস্তরের বিভিন্ন কর্মসূচি, অ্যান্টি-করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভ, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম এবং এক দেশ-এক-রেশন-কার্ড প্রকল্পের কথাও তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। তিনি এও বলেন, সরকারের এই সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড কিছু মিডিয়া দ্বারা উপেক্ষিত থেকে গেছে।