অমিত শাহর উড়ান চালাতে গিয়ে ‘মিথ্যার আশ্রয়’ নিলেন খোদ কার্গিল যুদ্ধের হিরো! এমন অভিযোগই এবার সামনে এল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উড়ান চালানোর অনুমতি আদায় করতে গিয়ে ভুয়ো তথ্য পেশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বিএসএফ পাইলট তথা ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন উইং কমান্ডার জেএস সাংওয়ানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাইলটের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ ও দিল্লি পুলিশ।
ঠিক কী অভিযোগ?
জুন ও জুলাই মাসে বিএসএফের এয়ার উইংয়ের থেকে একাধিক ই-মেল পায় লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো সংস্থা। এই সংস্থাই অমিত শাহের বিমান চালায়। ই-মেলে আর্জির সুরে জানানো হয় যে, সাংওয়ানকে ওই সংস্থার বিমান চালানোর জন্য সুযোগ দেওয়া হোক। ই-মেলে দাবি করা হয় যে, সাংওয়ান প্রশিক্ষিত এমব্রায়ার পাইলট। এই ই-মেলের পরই লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো সংস্থার তরফে গত জুলাইয়ে চেন্নাই-দিল্লি-মুম্বই বিমানের পাইলট হিসেবে সুযোগ দেওয়া হয় সাংওয়ানকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আসল ঘটনা সামনে আসে। এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখার জন্য বিএসএফের এয়ার উইং অফিসের দ্বারস্থ হয় ওই সংস্থা। বিএসএফ জানায়, সহ-পাইলট হিসেবেও স্বীকৃত নন সাংওয়ান। উনি পাইলট-ইন-কমান্ড হিসেবে রয়েছেন। পরে জানা যায়, নিজেই নিজের নামে সুপারিশ করেছেন সাংওয়ান। একটি ই-মেলে ভেরিফিকেশন কলের জন্য নিজের নম্বরও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণের সুরে বাঁশি বাজালে গরুরা বেশি দুধ দেয়, দাবি অসমের বিজেপি বিধায়কের
কিন্তু কেন এমন কাণ্ড করলেন সাংওয়ান, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন বিএসএফের এক শীর্ষ আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘কেন উনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিমান চালানোর জন্য এত তাড়াহুড়ো করলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে’’। এ ঘটনায় দিল্লিতে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাব-ইন্সপেক্টর অনুজ শর্মা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘‘যে কম্পিউটার রুম থেকে মেল করা হয়েছিল, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ ও সমস্ত নথি জমা দিতে বিএসএফকে নোটিস পাঠিয়েছি আমরা’’। বিএসএফের এডিজি এস এস চাহার বলেছেন, ‘‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে। পুলিশকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি’’।
আরও পড়ুন: মোদী সরকারকে বিরাট অঙ্কের টাকা দিচ্ছে আরবিআই
অভিযোগপত্রে বিএসএফের এয়ার উইংয়ের কমান্ডান্ট উইং কমান্ডার প্রবীণ আগরওয়াল উল্লেখ করেছেন, তাঁর পরিচয় ভাঙিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। ভুল তথ্য পেশ করা হয়েছে ওই সংস্থাকে। ডিজিসিএ ও ভারতীয় বায়ুসেনার নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে এতে। অন্যদিকে, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে পদকজয়ী সাংওয়ান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, আগরওয়ালের হয়েই তিনি মেল করেছিলেন। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে দাবি তাঁর। একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, তাঁকে পিআইসি না করা নিয়ে চক্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন মিলিটারি পিআইসি। আমি সিভিল পিআইসি হওয়ার চেষ্টা করছি। একটি মেলে আমার ফোন নম্বরও দিয়েছি। ওঁর (আগরওয়াল) মোবাইল নম্বরও দিয়েছি। কোনও কিছুই লুকোনোর নেই’’।
Read the full story in English