স্বাভাবিক ছন্দে জম্মু-কাশ্মীর। দু'দিন আগেই রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই বক্তব্য ঘিরেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে উপত্যকায়। বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ এলাকার সব দোকানপাট। শহরে খুব সংখ্যায় চোখে পড়েছে সরকারি পরিবহণ। তবে, বেসরকারি যান চলায় নাজেহাল হতে হয়নি কাশ্মীরিদের। অমিত শাহের মন্তব্যের সঙ্গে উপত্যকাবাসীর বাস্তব অভিজ্ঞতার কোনও মিল নেই বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। তাই দোকান বন্ধ করে প্রতিবাদ আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন ব্যবসায়ী, দোকানীরা। এই পরিস্থিতি খুব দ্রুত পাল্টানোর নয় বলে মনে করা হচ্ছে।
বুধবার রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, 'কাশ্মীরজুড়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি রয়েছে। সরকারি অফিসার ও কর্মীরা ভালভাবে কাজ করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও স্বাভাবিক।' তারপরই দোকান ও ব্যবসা বন্ধ করে প্রতিবাদের পথ বেছে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিধিনিষেধ নিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দিন, জম্মু কাশ্মীর প্রশাসনকে বলল সুপ্রিম কোর্ট
গত ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের ঘোষণা করে কেন্দ্র। রাজ্যকে দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগের সিদ্ধান্ত হয়। ভূস্বর্গজুড়ে মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তা বাহিনী। কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় উপত্যকার অধিকাংশ বাসিন্দা। সেই সময় কার্ফুর জেরে বন্ধ ছিল দোকানপাট, ব্যবসা বাণিজ্য। তারপর কার্ফু উঠলেও স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ হিসাবে ১০০ দিন তাদের কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছিলেন দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলি।
তারমধ্যেও অবশ্য কিছু দোকান খুলতে শুরু করেছিল। বিক্ষোভকারীদের হুমকি সহ্য করেই চালু হতে শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য। খুলছিল দোকানপাট। কিন্তু, অমিত শাহের মন্তব্যে ফের বনধের সিদ্ধান্ত নেয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। কাশ্মীর চেম্বার অফ কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির তরফে সভাপতি শেখ আশিক বলেন, 'কেউ দোকান বা ব্যবসা বন্ধ করতে বলেনি। ওরা নিজে থেকেই এই কাজ করেছে। বুধবার সব খোলা থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকে একদম অন্য ছবি ধরা দিচ্ছে।' কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে মন্তব্যের কারণেই এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: স্তব্ধ জম্মু-কাশ্মীর, ‘সবাই সব বুঝছে’, মত উপত্যকাবাসীর
শ্রীনগরের লালচক বাজারের দোকানি ইয়াসের আহমেদের কথায়, 'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। তিনি এমন এক ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করছেন যেন কাশ্মীরের মানুষ এই পরিস্থিতিতে খুব খুশিতে রয়েছেন।' এই আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে মনে করছে উপত্যকার ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী সংগঠন ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা।
বুধবার,পুরনো শ্রীনগরে দুটি দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, এবিষয়ে পুলিশের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
Read the full story in English