একডজন দেশে ৪০ কোটি লেনদেন, ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’-কোটি কোটির সম্পত্তি দেখে হাঁ দুঁদে গোয়েন্দারা। এবিষয়ে ইতিমধ্যেই অমৃতপাল সিংয়ের মা ও তার স্ত্রী’কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পাঞ্জাব পুলিশের বিশেষ আধিকারিকরা।
‘খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ প্রচার থেকে প্রাইভেট আর্মি’, ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে অমৃতপালের ভয়ঙ্কর কাণ্ডকারখানা। অমৃতপাল সিংকে ধরতে গত শুক্রবার থেকেই তল্লাশি জারি রেখেছে পাঞ্জাব পুলিশ। শনিবার তার মার্সিডিজ গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় অমৃতপাল। পাঞ্জাব পুলিশ তাকে কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করলেও পাঞ্জাব পুলিশের নজর এড়িয়ে উধাও হয়ে যায় এই খালিস্তানি নেতা। এর মাঝেই অমৃতপাল ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের কাছ থেকে ৪০ কোটির টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ। এখনও পর্যন্ত অমৃতপাল সিংকে এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। পাঞ্জাব পুলিশ বুধবার যে বাইকে চেপে অমৃতপাল পালিয়ে্ছে সেটিও উদ্ধার করেছে। জলন্ধর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রাম থেকে বাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
অন্যদিকে পাঞ্জাব পুলিশ অমৃতপাল সিংয়ের অমৃতপালের মা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অমৃতপাল সিংয়ের স্ত্রী কিরণদীপকেও বিদেশি তহবিল নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জলন্ধরের শাহকোটে অমৃতপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন ধারায় মামলা করেছে। পুলিশ অস্ত্র আইনের 386, 506, 148, 149 এবং 25/27-54-59 ধারায় মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওয়ারিস পাঞ্জাব দে-এর অন্তত পাঁচ সদস্যের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০১৬ সাল থেকে সাত বছরে ছড়িয়ে ৪০ কোটি টাকারও বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের সন্ধান মিলেছে। অমৃতপাল সিং এখনও পলাতক। তদন্তকারী সংস্থার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে দিল্লি সীমান্তে কৃষক আন্দোলনের সময় প্রাণ হারিয়েছেন এমন কিছু পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া হয়েছে।’ এ ছাড়া অন্য একটি মামলার তদন্তে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড প্রচারের নামে টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। সূত্রের খবর, অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী দলজিৎ সিং কালসির কাছ থেকে ৩৫ কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারী দলের সদস্যরা। লেনদেন হয়েছে অন্তত ১২টি দেশ থেকে। অমৃতপালের আর্থিক লেনদেনের ওপরও নজর রাখার চেষ্টা করছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
শনিবার (১৮ মার্চ) অমৃতপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এরপর পুলিশ তাকে কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করে, যদিও সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর মার্সিডিজ গাড়ি রেখে পালিয়ে যান অমৃতপাল সিং। এরপর একটি ব্রেজা গাড়ি ও বাইক ব্যবহার করেন। সিসিটিভি ফুটেজের যে ছবি সামনে এসেছে তাতে অমৃতপালকে গোলাপি পাগড়িতে দেখা যাচ্ছে।পুলিশ জানায়, অমৃতপাল সিংকে পালাতে সাহায্য করেছে এমন চারজনকে আটক করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের আইজিপি সুখচাইন সিং বলেছেন, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। জনগণের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। অমৃতপালের ব্রেজা গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মান বলেছিলেন, এই ঘটনায় কাউকে রেহাই করা হবে না।