পঞ্জাবের খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংকে শেষবার হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে। এমনটাই দাবি পঞ্জাব পুলিশ। নিজেদের দাবির সমর্থনে পঞ্জাব পুলিশ একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করেছে। সেই ফুটেজে ছাতা মাথায় এক ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, তাঁর মুখ দেখা যায়নি। ফুটেজ দেখা গিয়েছে পিছন থেকে। ওই ব্যক্তির পরনে ছিল প্যান্ট-জামা।
‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপাল। সম্প্রতি পঞ্জাবকে অশান্ত করে তোলার পিছনে এই যুবকের বড় ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছে পঞ্জাব পুলিশ। তার সংগঠনের মাধ্যমে গোটা পঞ্জাবে স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল অভিযুক্ত। ইতিমধ্যে তার বেশ কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেফতার ও আটক করা হয়েছে। এমনকী, যারা তাকে পালাতে সাহায্য করেছে, তাদেরকেও গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশ। কিন্তু, এখনও অবধি অমৃতপালকে গ্রেফতার করা যায়নি।
অমৃতপাল সিং এবং তার সঙ্গী পাপলপ্রীত সিংকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা বলজিৎ কৌর পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। বলজিৎ কৌর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন যে বিচ্ছিন্নতাবাদী অমৃতপাল সিং তার চেহারা পরিবর্তন করেছেন। তিনি আরও জানান, অমৃতপাল সিং তার পাগড়িও খুলে ফেলেছেন। পুলিশের কাছে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন বলজিৎ কৌর।
১৮ মার্চ, অমৃতপাল সিং তার সহযোগী পাপালপ্রীত সিং একটি স্কুটারে চেপে লুধিয়ানা হয়ে পাতিয়ালা পৌঁছেছিলেন এবং তার এক সহযোগীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরের দিন দুজনেই একই স্কুটারে হরিয়ানার উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং শাহাবাদে (কুরুক্ষেত্র) বলজিৎ কৌরের বাড়িতে পৌঁছান। পাপালপ্রীত সিং আগে থেকেই বলজিৎ কৌরকে চিনতেন। পুলিশের মতে, ২০ মার্চ পাপলপ্রীত তার বাড়ি থেকে বাসস্টপে গিয়েছিল এবং একই সঙ্গে পালানোর অন্য উপায় খুঁজছিল।
পুলিশ বলেছে যে অমৃতপাল সিং বালজিৎ কৌরের সঙ্গে তার সমস্ত কল রেকর্ড এবং সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাটগুলিও মুছে ফেলেছে এবং তাকে তার অবস্থান কারও কাছে প্রকাশ না করার নির্দেশ দিয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে'-এর প্রধান অমৃতপাল সিংকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে। অমৃতপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ৩৮ বছর বয়সী পাপালপ্রীত সিং পুলিশের হাত থেকে অমৃতপাল সিংয়ের পালানোর পিছনে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন, যিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। গত বছর ভারতে ফেরার পর থেকেই অমৃতপালের সঙ্গে কাজ করছিলেন পাপলপ্রীত। ভারতে ফিরে আসার পর, অমৃতপাল অভিনেতা দীপ সিধুর প্রতিষ্ঠিত 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' সংগঠনের লাগাম নিজের হাতে নেন। ২০২১ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় দীপ সিধু নিহত হন।
এই ব্যাপারে পঞ্জাব পুলিশের আইজি (সদর) সুখচাইন সিং গিল জানিয়েছেন, অমৃতপাল ভিনরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিবেশী রাজ্য হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র জেলার শাহবাদ-মার্কান্দা এলাকায় তাকে শেষবার দেখা গিয়েছে। সুখচাইন জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে অমৃতপাল যে মহিলার সঙ্গে রাত্রিবাস করেছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবশ্য সুখচাইন স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘অমৃতপাল এখন ঠিক কোথায় পৌঁছেছেন, এখনই আমরা বলতে পারছি না। আমরা সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছি।’