ধর্ষণ মামলায় জামিনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিপ্তে শুক্রবার আন্দামানের প্রাক্তন মুখ্য সচিবের কাছে জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্যাতিতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত জিতেন্দ্র নারায়ণকে নোটিস পাঠিয়েছে বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারি ও আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের ওপর এদিন কোন স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টের পোর্ট ব্লেয়ার সার্কিট বেঞ্চ ২০ ফেব্রুয়ারি নারায়ণকে জামিন দেয়। মহিলার অভিযোগ, চাকরির অজুহাতে নারায়ণ ও অন্যরা তাঁকে তৎকালীন মুখ্যসচিবের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এই বিষয়ে ২০২২ সালের ১লা অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই সময় জিতেন্দ্র নারায়ণ দিল্লি ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৭ অক্টোবর তাকে সাসপেন্ড করে কেন্দ্র।
গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রাক্তন মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র নারায়ণের জামিনের বিরুদ্ধে তরুণীর আবেদনের ভিত্তিতে নোটিস জারি করল শীর্ষ আদালত। বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারি এবং আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহর একটি বেঞ্চ এই আবেদনের উপর নোটিশ জারি করেছে। এর আগে অভিযুক্ত ওই আমলা জিতেন্দ্র নারায়ণ দিল্লি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আগাম জামিনের আর্জি জানান। দিল্লি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ‘রক্ষাকবচ’দেয়।
সেই সময়সীমা বৃদ্ধির আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দরবার করেন। যার প্রেক্ষিতে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ ও ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত জিতেন্দ্রকে ‘রক্ষাকবচ’দেয় কলকাতা। সুপ্রিম কোর্টে এদিন শুনানির সময়, মহিলার আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে হাইকোর্ট বিষয়টি যথাযথ বিবেচনা না করে প্রাক্তন মুখ্য সচিবকে জামিন দিয়েছেন। উল্লেখ্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি, কলকাতা হাইকোর্ট অভিযুক্ত প্রাক্তন মুখ্য সচিব জিতেন্দ্র নারায়ণকে জামিন দেয়। এই আদেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন অভিযোগকারিণী। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য পোর্ট ব্লেয়ার সার্কিট বেঞ্চের জামিনের আদেশ স্থগিত করতে অস্বীকার করে।
উল্লেখ্য, ২১ বছর বয়সী মেয়েটির অভিযোগ যে তাকে সরকারি চাকরির অজুহাতে তৎকালীন মুখ্য সচিবের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে তাকে নারায়ণ এবং অন্যরা ধর্ষণ করে।
এফআইআরটি ১ অক্টোবর, ২০২২-এ দায়ের করা হয়। যখন নারায়ণকে দিল্লি ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান (সিএমডি) হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। বিতর্কের পরে, কেন্দ্র তাকে ১৭ অক্টোবর, ২০২২-এ সাসপেন্ড করে।
এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট অভিযুক্তকে তদন্তকারী এসআইটির সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। SIT মহিলার অভিযোগের তদন্ত করছে। তরুণীর অভিযোগ যে তাকে ১৪ এপ্রিল, ২০২২ এবং ১ মে, ২০২২-এ নারায়ণ এবং তার সঙ্গীরা তাকে ধর্ষণ করেছিল।
গত বছরের এপ্রিল-মে মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে পুলিশের কাছে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। পাশাআপশি মহিলা পুলিশকে তৎকালীন মুখ্য সচিবের বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজটি প্রমাণ হিসাবে সংরক্ষণ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ মামলার তদন্তের জন্য আন্দামান ও নিকোবর পুলিশ একজন সিনিয়র আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে একটি এসআইটি গঠন করে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন একজন সিনিয়র আইপিএস অফিসার ।