নজিরবিহীন! দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতির দৌড়ে এগিয়ে থাকা বিচারপতি এন ভি রামানার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি। হাইকোর্টের কয়েকজন বিচারপতির রস্টার সহ বিচার প্রক্রিয়ার উপর বিচারপতি রামানা প্রভাব খাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ জগনমোহনের। ইতিমধ্যেই অভিযোগের কথা দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদেks চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী।
বিচারপতি এন ভি রামানার সঙ্গে বিরোধী দলনেতা টিডিপির চন্দ্রবাবু নাইডুর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলেও আট পাতার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ। এছাড়া, বিরোধী দলের দুর্নীতি সংক্রান্ত বহু মামলা সহ অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের বহু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রায় দিয়েছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যে সব দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, সেগুলিও বিচারপতি রামানা প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলে দাবি জগনমোহনের।
শনিবার অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের তরফে বিচারপতি রামানার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আজেয়া কল্লাম।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সানডে এক্সপ্রেস সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে জানতে চাইলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
গত মাসেই বিচারপতি এন ভি রামানা এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, 'নিজের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে বিচারপতিরা আত্ম-সংযত হয়ে থাকেন। তাই বর্তমানে তাঁদেরই সমালোচনায় বিদ্ধ করে নিশানা করা হচ্ছে। বিষয়টি সোশাল মিডিয়া এবং প্রযুক্তির বিস্তারের ফলে আরও জটিল হয়েছে। বিচারপতিরা এখন সোশাল মিডিয়ায় চর্চা বিষয় এবং অপবাদজনকপোস্টের শিকার হচ্ছেন।' এরপরই গত বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন জগনমোহন।
অভিযোগে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি বলেছেন, তেলুগু দেশম পার্টির হয়ে কাজ করছেন বিচারপতি এন ভি রামানা। অন্ধ্রের বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে ওই বিচারপতির খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলেই অভিযোগ তাঁর। ওই বিচারপতি নিজের প্রভাব খাটিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারকদেরও নিজের দিকে করে নিয়েছেন। ফলে তাঁরাও সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। চিঠির সঙ্গে আরও নথি দিয়ে নিজের অভিযোগের যথার্থতা প্রমাণ করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এইসব কাগজ দিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, বারবার সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ করার জন্য তেলুগু দেশম পার্টির পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারকরা। এছাড়া চন্দ্রবাবু নাইডু মুখ্যমন্ত্রী (জুন, ২০১৪ - মে, ২০১৯) থাকাকালীন যেসব দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তার তদন্তের ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেও করেছেন বিচারপতিরা- এমনটাই অভিযোগ তাঁর।
রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল ডি শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধের জমি সংক্রান্ত মামলাতেও হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ ওয়াই এস আর কংগ্রেস প্রধানের। প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে বিচার ব্যবস্থার নিরেপক্ষতা বজায় রাখার আর্জি ও বিষয়টিতে উপযুক্ত হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। আদালতের কার্যপদ্ধতি বিচারপতি রামানা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে অভিযোগ। বস্তুত, অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের তিনটি রাজধানী তৈরির পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করেছে হাই কোর্ট। যা অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন