সরকার বিরোধী বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা। গতকাল দ্বীপরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। তার আগেই প্রাসাদ ছেড়ে সপরিবারে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে কোটি কোটি টাকা তাঁরা পেয়েছেন। এমনটাই রিপোর্ট স্থানীয় মিডিয়ার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল, যাতে দেখা গেছে, বিদ্রোহীরা সেই লঙ্কার মুদ্রা গুনছেন। ছড়িয়ে ছিটে পড়েছে তাড়া তাড়া নোট। ডেইলি মিরর সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই টাকা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যে দেশে মানুষ খেতে পাচ্ছেন না, দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে সরকার। তার প্রেসিডেন্টর প্রাসাদে কোটি কোটি টাকা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়।
উল্লেখ্য, শনিবার কয়েক হাজার সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারী রাজাপক্ষের সেন্ট্রাল কলম্বোর প্রাসাদে ঢুকে পড়েন। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে হই হই করে সবাই ঢুকে পড়েন। দ্বীপরাষ্ট্রের আর্থিক সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে। সরকারের উপর আর আস্থা নেই জনগণের। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। আরও কিছু বিক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমসিঙ্ঘের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তাঁরা সেই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। তার আগেই সপরিবারে বাড়ি ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা, ‘ধীরে চলো নীতি’ উদ্বিগ্ন ভারতের
গোটাবায়া এবং তাঁর পরিবারের এখনও কোনও খোঁজ নেই। বেশ কয়েকটি মিডিয়ার দাবি, নৌসেনার রণতরীতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। সেখানেই থাকবেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত। কিন্তু পার্লামেন্টের স্পিকার ইয়াপা আবেবর্ধনে ঘোষণা করেছেন, বুধবার পদত্যাগ করবেন প্রেসিডেন্ট। তার আগে শনিবারই ইস্তফা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবারই সর্বদলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রেসিডেন্টের ইস্তফা দেওয়ার উচিত। এর পর গদি ছাড়ার জন্য গোটাবায়াকে চিঠি দেন স্পিকার।
প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর অবর্তমানে দেশের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালাবেন স্পিকার। পরে সাংসদদের মধ্যে ভোটাভুটি করে নয়া প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়া হবে। গত মে মাসেই গোটাবায়ার দাদা মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে বাধ্য হন। তার জায়গায় কুর্সিতে বসেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রনিল। কিন্তু ২ মাসের মধ্যে তাঁকেও গদি ছাড়তে হল। রাজাপক্ষ ভাইয়েরা দেশের মানুষের কাছে হিরোর মর্যাদা পেয়েছিলেন তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ জেতার পর। কিন্তু তাঁরাই এখন দেশবাসীর শত্রু হয়ে গেলেন।