কেরালায় আদানির মেগা বন্দর নির্মাণের প্রতিবাদ হিংসাত্মক আকার নিয়েছে। রবিবার রাতে ভিজিনজাম থানায় হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় কমপক্ষে ২৯ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। সকল্কেই স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভিজিনজামের সাধারণ মানুষ চান না এই বন্দর তৈরি হোক। এর বিরুদ্ধে ১২০ দিন ধরে চলে প্রতিবাদ। রবিবার ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। এরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় হামলা চালায়।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, স্থানীয় মানুষজন লাঠি ও পাথর নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর এই ঘটনায় পুলিশের ৪টি জিপ, ২টি ভ্যান ও ২০টি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। থানায় আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও নষ্ট করা হয়। থানায় হামলার পর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এলাকায় ২০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মৎস্যজীবিদের অভিযোগ, এই বন্দরের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই উপকূলবর্তী একালায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমি ক্ষয় শুরু হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মৎসজীবীদের উপর। ইতিমধ্যে অনেকেই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তারপর সামুদ্রিক মাটি অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে। ফলে, বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁরা জানিয়েছে, এর উপর প্রায় ৫৬ হাজার মৎস্যজীবি সম্প্রদায় মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। তাই, অবিলম্বে সরকার এই নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
অন্যদিকে, আদানি গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইন মেনেই এই বন্দর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকদের থেকে বন্দর নির্মাণের বিষয়ে যাবতীয় পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। খবরে অনুসারে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় কমপক্ষে ২৯ জন পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের এডিজি বলেন, "বিক্ষোভ গত ১২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলছে। আমরা সংযম বজায় রেখে চলেছি। কিন্তু রবিবার, জনতা থানা ভাংচুর করে এবং আধিকারিকদের উপর হামলা চালায়।" এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে অতিরিক্ত ২০০ পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় টিভি চ্যানেলের এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়। তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাকে তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেরালার আদানি বন্দর নির্মাণের প্রতিবাদে রবিবার লাতিন ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা ভিজিনজাম থানায় হামলা চালায় বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে গির্জার কর্মকর্তাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ফাদার ই পেরেইরা বলেছেন যে চার্চ শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।