পাকিস্তান পার্লামেন্টের জনপ্রতিনিধি আনোয়ার-উল-হক কাকারকে জাতীয় নির্বাচনের আগে তদারকি সরকারের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শনিবার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বিরোধী নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে বৈঠকের পর এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রী (শরিফ) এবং বিরোধীদলীয় নেতা যৌথভাবে পরামর্শে (কাকারকে প্রধানমন্ত্রী করার) স্বাক্ষর করেছেন, যা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।' পাকিস্তানের জিও নিউজ অবশ্য জানিয়েছে, কাকারের নিয়োগ অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
পাকিস্তানের ব্যবস্থায়, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্বর্তী সময়ে দায়িত্ব নেয় যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। সরকারিভাবে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে। নভেম্বরের প্রথম দিকে পাকিস্তানে নির্বাচন হতে চলেছে। কাকার পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের একজন স্বল্প পরিচিত রাজনীতিবিদ। তিনি আপাতত একটি মন্ত্রিসভা চালাবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সরকার গঠিত না-হওয়া পর্যন্ত একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া পরমাণু শক্তিধর দেশকে পরিচালনা করবেন। সেই দেশের সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
আরও পড়ুন- তিনটি নতুন বিল নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা, এগুলো ফৌজদারি আইনের খোলনলচে বদলে দেবে?
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ১৬ মাসের মেয়াদ বুধবার (৯ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সভা 'ভেঙে দেওয়ার' পরামর্শ দিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ অবশ্য এবার অন্যবারের তুলনায় বেশি গুরুত্ব পাবে। কারণ, অর্থনৈতিক বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এবার প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত ক্ষমতা থাকবে। আর, নির্বাচন ছয় মাস পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে। এর পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনকে শতাধিক ফেডারেল এবং প্রাদেশিক নির্বাচনী এলাকার জন্য নতুন সীমানা নির্ণয় করতে হবে। আর, তার ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ স্থির হবে।
ইতিমধ্য়েই পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেলবন্দি। তিনি তোষাখানা মামলায় প্রতারণার অভিযোগে জেলে গিয়েছেন। এর ফলে, উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া এবার পাকিস্তান পার্লামেন্টের নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে ইমরানের দল কাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন করবে বা প্রার্থী করবে? নওয়াজ শরিফ কি পাকিস্তানে ফিরবেন? প্রতিবেশী দেশটির রাজনীতিতে এই সব প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনও অধরা।