Advertisment

দু'দেশের সম্পর্কের অবনতি, ভবিষ্যৎ কী হবে! চরম আশঙ্কায় পড়ুয়া, কানাডায় কর্মরত ভারতীয়রা

খালিস্তানি জঙ্গিনেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের 'সম্ভাব্য যোগসূত্র' ইঙ্গিত করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বিবৃতি দেওয়ার পর কানাডা এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। তারপরই ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Indian students

ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক উত্তেজনা, যাঁরা কানাডায় লেখাপড়া করতে এবং পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে ইচ্ছুক, তাঁদের ওপর দুশ্চিন্তার মেঘ তৈরি করেছে। (প্রতীকী ছবি)

ভারত-কানাডা সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবনতির পর, ভয় এবং উদ্বেগ আঁকড়ে ধরেছে সেদেশে পঠনপাঠনরত এবং স্থায়ীভাবে (পিআর) থাকতে ইচ্ছুক ভারতীয়দেরকে। পাশাপাশি, কানাডার সঙ্গে কাজ করা শিক্ষাগত পরামর্শদাতারাও রীতিমতো শঙ্কায়। কারণ, তাঁরা আর ভারত থেকে নিয়ে গিয়ে সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়ুয়াদের ভর্তি করাতে পারবেন না।

Advertisment

কানাডার প্রধানমন্ত্রী যা জানিয়েছেন

কানাডার সংসদে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, জুন মাসে নিহত কানাডার বাসিন্দা খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যায় ভারত সরকারের 'সম্ভবত যোগ' রয়েছে। এরপরেই কানাডা সোমবার একজন উচ্চপদস্থ ভারতীয় কূটনীতিককে সেদেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। আর, তারপরই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারেতে এক গুরুদ্বারের বাইরে নিজ্জারকে গুলি করে খুন করা হয়েছে।

কে এই নিজ্জর?

কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর (৪৫)।

খালিস্তানপন্থী জঙ্গি সংগঠন খালিস্তান টাইগার ফোর্স (কেটিএফ)-এর প্রধান।

১৯৯৭ সালে ভারত থেকে কানাডায় পালিয়ে গিয়েছিল নিজ্জর। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার এক গুরুদ্বারের প্রধান ছিল।

২০২০ থেকে ওই গুরুদ্বারের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিল।

এবছর ১৮ জুন খুন হয় নিজ্জর।

কানাডার সারে এলাকায় গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিব চত্বরের পার্কিং লটে খুন হয়।

দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত হয়।

ফেব্রুয়ারিতেই 'কেটিএফ'-কে ইউএপিএ ধারায় জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করে বিদেশ মন্ত্রক।

নিজ্জরকে গ্রেফতার করার জন্য মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল এনআইএ।

কানাডায় প্রচুর ভারতীয় থাকেন

কানাডায় প্রচুর ভারতীয় বাস করেন। প্রবাসী পঞ্জাবিদের সংখ্যা বেশ বেশি। সেই সব কারণে কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতীয় পড়ুয়াদের বেশ পছন্দের। কানাডায় যত আন্তর্জাতিক ছাত্র পড়তে যায়, তার প্রায় ৪০ শতাংশ ভারতের। কিন্তু, এবার সেই কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।

publive-image
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

পড়ুয়ারা উদ্বেগে

স্বভাবতই উদ্বেগে কানাডার ভারতীয় পড়ুয়ারা। তাদেরই অন্যতম জলন্ধরের ছাত্র বিক্রমজিৎ সিং অরোরা। তিনি বলেন, 'আমি গত মাসেই আমার আইইএলটিএস (আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা টেস্টিং সিস্টেম) পাশ করেছি। এখন আমি কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছি। কারণ, আমার চূড়ান্ত স্বপ্ন পড়াশোনা শেষে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা। কিন্তু, এখন আমি ভয় পাচ্ছি, কানাডার দূতাবাস আমার স্টুডেন্ট ভিসা আবার প্রত্যাখ্যান না-করে দেয়।'

আরও পড়ুন- কানাডায় পোক্ত ঘাঁটি ভারত-বিরোধী খালিস্তানিদের! কতটা প্রভাব পড়ছে দু’দেশের সম্পর্কে?

নানা জায়গা থেকে আশ্বাসই ভরসা পড়ুয়াদের

কানাডার অপর এক পড়ুয়া আশনুর কউর। তিনি জানিয়েছেন, দু'দেশের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তাঁর উদ্বেগও বেড়েছে। তবে, অন্য একজন ছাত্র এব তাঁর শিক্ষা পরামর্শদাতা আশ্বাস দিয়েছেন যে, 'বিদেশে পঠনপাঠন'-এর সুযোগগুলো প্রভাবিত হবে না। কারণ কানাডা বা ভারত কেউই শিক্ষার এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করতে চায় না। কউরের কথায়, 'আমি আমার পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে একটি কানাডিয়ান কলেজে ভর্তি হতে সহায়তা করছেন। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে চিন্তা করার কোনও দরকার নেই।'

India Canada Justin Trudeau PM Narendra Modi
Advertisment