অ্যাপেলের আধিকারিকের গাড়ির মধ্যে লাঠি ঢুকিয়ে তাঁদের থামতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। গাড়ির সওয়ার বিবেক তেওয়ারি ও সানা খানকে গাড়ি থেকে নেমে আসতে বলা হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনাবহুল রাতের প্রত্যক্ষদর্শী সানা খান নিজেই এ ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
সানা থাকেন লখনউয়ের কাছে, ভাড়া করা এক অ্যাপার্টমেন্টে। তাঁর আসল বাড়ি এবং তাঁর বর্তমান বাসস্থানের বিস্তারিত বিবরণ তাঁর অনুরোধক্রমেই গোপন রাখা হয়েছে। সানার বয়ানে, ‘‘ওরা মারমুখী ভঙ্গিতে তেড়ে এসেছিল, বাইক পার্ক করে আমাদের গাড়ি দাঁড় করাতে বলেছিল, আমাদের গাড়ি থেকে নেমে আসতে বলছিল। এক কনস্টেবল গাড়ির মধ্যে লাঠি ঢুকিয়ে দিচ্ছিল, এই সব যখন হচ্চিল তখন স্যারের মনে হয়েছিল গাড়ি থামানো ঠিক হবে না।’’
সানা জানিয়েছেন, বিবেক তেওয়ারি গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধাক্কা লেগে বাইক পড়ে যায়। ‘‘পুলিশরা অন্য দিকে দাঁড়িয়েছিল। স্যার গাড়ি নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করলে যে বাইকে বসেছিল সে বাইক দাঁড় করিয়ে স্যারকে গুলি করে। স্যার আরও কয়েক মিনিট গাড়ি নিয়ে এগোন, তার পর গাড়ি দেওয়ালে ধাক্কা মারে। তখন ওঁর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’’ সানা জানিয়েছেন বিবেক তেওয়ারির তখন নিঃশ্বাস পড়ছিল কিন্তু তিনি কথা বলতে পারছিলেন না।
সেদিন তিনি তাঁর ফোন বাড়িতে ফেলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সানা। এবং বিবেক তেওয়ারির ফোন ছিল লকড। সানা বলেছেন, ‘‘আমি নিচে নেমে কাঁদছিলাম, সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলাম। রাস্তার ধারে কিছু ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। আমি ট্রাক ড্রাইভারদের কাছে গিয়ে একটা ফোন করতে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওরা সবাই বলল ওদের কাছে মোবাইল ফোন নেই। মিনিট পনের পর পুলিশের গাড়ি এসে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে বলেছিল।’’
অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হচ্ছিল বলে পুলিশের কাছে বিবেক তেওয়ারিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন সানা। তখন পুলিশের গাড়িতে করে বিবেককে লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সানা জানিয়েছেন, হাসপতাল থেকে তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এক মহিলা কনস্টেবল তাঁর বয়ান নিয়ে তাঁকে সই করে দিতে বলেন। ‘‘আমি পুলিশকে বলেছিলাম আমাকে বাড়ি নিয়ে যেতে, যাতে আমি বাড়ির লোককে ফোন করতে পারি। ওরা আমাকে বাড়িতে নিয়ে যায় কিন্তু ফোন করতে দিয়েছিল আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর।’’
সানার মা শনিবার এসে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ন্যায়ের জন্য লড়াই করব কিন্তু কী করতে হবে আমরা জানি না। আমার মেয়ে এম বি এ করছে, তার সঙ্গে চাকরি করছে, কিন্তু এখন তো সব ওলটপালট হয়ে গেল।’’ সানা বলেছেন, সে রাতে একটা খুন হয়েছে, আমি চাই সবাই সে দিকে নজর দিক। আমি নিজের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে চাই কিন্তু তা কী করে সম্ভব হবে জানি না।’’