করোনায় মৃত্যু ঘিরে দেশে বাড়ছে রহস্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী নাটকীয়ভাবে করোনামৃত্যু সংখ্যায় রেকর্ড পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে। কিন্তু শ্মশানের হিসেব বলছে আরও কম। দেশজুড়ে লকডাউন, বন্ধ রেল ও বাস পরিষেবা, কোথাও কোনও দুর্ঘটনার খবরও নেই, সেই কারণেই কি শ্মশানে কমছে মৃতদেহের সংখ্যা?
Advertisment
বিশেষজ্ঞদের মতে যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন তাই খবর দেওয়ার উপায় বন্ধ, ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যু সংখ্যার সঠিক হিসেবও আসছে না স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে। হাসপাতালে ভর্তি না হলে সেই তথ্য কেন্দ্রের কাছে পৌঁছনও সম্ভব নয় বলেই তাঁদের দাবি। তবে বিশ্বের হিসেব বলছে চিন থেকে ছড়ানো এই করোনাভাইরাসের দাপটে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত প্রায় ২৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ, মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার।
সারা বিশ্বে জুড়ে যেখানে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা সেখানে ভারতে দেখা যাচ্ছে এক অন্য চিত্র। অন্ত্যোষ্টি সার্ভিসের (বেঙ্গালুরু এবং কলকাতায় যাঁদের অফিস রয়েছে) চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শ্রুতি রেড্ডি বলেন, "আমাদের কাছে খুব অবাক লাগছে বিষয়টি। জানুয়ারিতে দিনে পাঁচটি কাজ আসত, সেখানে এই মাসে দিনে ৩টি কাজ হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি এরকম পরিস্থিতি হলে কর্মচারীদের মাইনে কাটতে হবে।" একই চিত্র সেন্ট্রাল মুম্বাইতেও। পুরসভার রিপোর্ট বলছে মার্চে মৃত্যু সংখ্যা কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। এমনকী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য আহমেদাবাদেও ৬৭ শতাংশ কমেছে মৃত্যুহার।
এদিকে ভারতের জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজির প্রফেসর গিরিধর বাবু বলেন, "মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে এটা যদি দেখা না যায় তাহলে ধরে নিতে হবে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর যে সংখ্যা দেখান হচ্ছে তা সঠিক নয়।"
অন্যদিকে এপ্রিলেই প্রায় ২০০০টি মৃত্যু দেখেছে নেদারল্যান্ড। মার্চ মাসে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার শ্মশানে বেড়েছে মৃতদেহের সংখ্যা। মৃত্যু বেড়েছে ইটালিতেও। তবে ভারতীয় চিকিৎসক, আধিকারিকেরা এবং শ্মশান কর্মচারীরা এর নেপথ্য দেখছেন সড়ক ও রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাস। এ প্রসঙ্গে আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন "সড়ক দুর্ঘটনা, মাদক সেবন, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যাও কমেছে।" এমনকি কমেছে খুন-খারাপির মতো ঘটনাও। উত্তরপ্রদেশের একটি শ্মশান ঘাটের দায়িত্বে থাকা নীরজ কুমার বলেন, "আগে প্রায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টা এমন ঘটনা আসত। কিন্তু লকডাউনের পর স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে এমন দেহই আসছে।"