চুশুলে তৃতীয় ইন্দো-চিন সেনার কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরও সীমান্তে অচলাবস্থা কাটেনি। মুখে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরানোর কথা বললেও বাস্তবে তা করতে রাজি নয় লাল ফৌজ। ফলে, শীত পর্যন্ত লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দু'দেশের সেনা দাঁড়িয়ে খাকবে বলেই মনে করছে ভারতীয় সেনাবহিনী। এর জন্য প্রস্তুতিও চালাচ্ছে সেনা।
ভারতীয় সেনাবাহিনী মনে করছে যে, 'এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এত সহজে মিটবে সেই আশা করা ঠিক নয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দীর্ঘ প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনা। হয়তো শীতেও নিয়ন্ত্রণরেখায় মোখোমুখি দাঁড়াতে দেখা যাবে ইন্দো-চিন সেনাকে।' তৃতীয় বৈঠকও প্রায় ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে।
মঙ্গলবার সকালে চুশুল সীমান্তের বৈঠকে ভারতের পক্ষে ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ ও চিনের তরফে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের চিফ মেজর জেনারেল লিউ লিন। জানা গিয়েছে., ফিঙ্গার আট থেকে চার পর্যন্ত অনুপ্রবেশ করা চিনা সেনার ফিরে যাওয়া নিয়ে বৈঠকে সওয়াল করেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এপ্রিল-মে-য়ের আগে নিয়ন্ত্রণরেখায় যে স্থিতাবস্থা ছিল তা পুনরুদ্ধারের জন্যই এর আগের দু'টি বৈঠকে দু'দেশের সেনা পর্যায়ে আলোচনা হয়েছিল বলে জানা যায়। মঙ্গলবারের বৈঠকে প্যাংগংয়ের উত্তর অংশ, গালওয়ান ও গোগরা পোস্ট উষ্ণ প্রস্রবণ এলাকা থেকে চিনা বাহিনীর সরে যাওয়ার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে ভারত। উপগ্রহ দেখা গিয়েছে গত আট দিনে সেনা কমানো তো দূরের কথা, উল্টে বিতর্কিত এলাকাগুলিতে সেনা সমাবেশ ও পরিকাঠামো তৈরি করতে দেখা গিয়েছে চিনকে। বৈঠকে তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
দেপসাং এলাকাতেও নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে লাল ফৌজ চলে এসেছে বলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আগেই খবর করেছিল। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দেপসাং পরিস্থিতিও এদিনের বৈঠকে আলোচনায় উঠে এসেছিল। কৌশলগত দিক থেকে সেনা বাহিনীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা।
এপ্রিল থেকে প্যাংগং এলাকায় প্রবেশ শুরু করেছিল চিনা সেনা। বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত এলাকা দখল করে নেয় লাল ফৌজ। ফলে পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ পর্যন্ত টহল দিতে পারছে না ভারতীয় সেনা। পাল্টা হিসাবে ওই এলাকায় বারতীয় বাহিনীর সংখ্যা ও সমরাস্ত্র্ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে ইন্দো-চিন সেনা। সব মিলিয়ে ওই সংঘাত আরও বেশ কয়েক মাস বজায় থাকবে তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট।
Read in
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন