মার্কিন জাদুঘরে ৯৪টির মত প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু জম্মু-কাশ্মীরে ফিরিয়ে আনার পথ তৈরি হয়েছে। যে সব উধাও হয়ে যাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের খোঁজ এখনও মেলেনি, সেগুলোর তদন্তে সামান্য হলেও অগ্রগতি ঘটেছে। ইতিমধ্যেই প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ জানতে পেরেছে, নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অফ আর্টের ৭৭টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাচার হয়েছিল। আর, সেই পাচারকারী বর্তমানে তামিলনাড়ুর জেলে সাজা কাটছে। কিন্তু, ওই মিউজিয়ামে আরও ৯০টিরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। যা এই জম্মু-কাশ্মীর থেকেই আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
একদিকে জম্মু-কাশ্মীরের ৯৪টি প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তুর সঙ্গে মার্কিন মিউজিয়ামের সম্পর্ক রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে এশিয়ার নানা পুরাকীর্তি। এর মধ্যে রয়েছে ৮১টি ভাস্কর্য, পাঁচটি চিত্রকর্ম, একটি পাণ্ডুলিপির পাঁচটি পৃষ্ঠা, দুটি কাশ্মীরের কার্পেট পুরাকীর্তি এবং একটি পৃষ্ঠার ক্যালিগ্রাফি। এগুলো কোনওটারই বিশদ বিবরণ নেই। পটভূমির নথি নেই। কখন বা কার দ্বারা ওই সব প্রত্নতত্ত্ব জম্মু-কাশ্মীর থেকে মার্কিন মুলুকে এল, তার বিবরণ নেই। বাধ্য হয়েই ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (ICIJ) এবং যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ফাইনান্স আনকভারডের সঙ্গে মিলিতভাবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তদন্ত করেছে।
এর পাশাপাশি, জম্মু ও কাশ্মীরে নিখোঁজ প্রত্নবস্তু নিয়ে বেশ কয়েকটি এফআইআর রয়েছে। যার মধ্যে কিছু এফআইআরে প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তুকে চিহ্নিত করা যায়নি বা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে। আর, এই সব তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলাগুলো বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। এই সব দেখেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাধ্য হয়েছে আলাদা করে তদন্ত করতে। আরটিআইয়ের নথি এবং দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তদন্তে আদালত এবং পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী তদন্তের সময় খতিয়ে দেখা হয়েছে শ্রীনগরের গুরুত্বপূর্ণ সাইটগুলি। বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- বিদেশে পাচার একের পর এক ভারতীয় পুরাকীর্তি! এই ব্যাপারে কী বলে আইন?
মার্কিন মিউজিয়ামের পাওয়া জম্মু ও কাশ্মীরের প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তুগুলোর মধ্যে কাশ্মীর অঞ্চলের শৈব, বৈষ্ণব এবং বৌদ্ধধর্মের একসময়ের বিকাশমান সংস্কৃতির চিহ্ন রয়েছে। এই সব প্রত্নতত্ত্বের মধ্যে ২৪টি আমেরিকান গণিতবিদ, প্রয়াত স্যামুয়েল আইলেনবার্গের মাধ্যমে মিউজিয়াম পেয়েছে। প্রয়াত গণিতবিদ আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তুর ডিলারের সহযোগী ছিলেন। ওই ডিলারের কাজের ওপর নজর রাখছেন তদন্তকারীরা।