Advertisment

অরুণাচলের 'অপহৃত' কিশোরকে লাথি-ইলেকট্রিক শক দিয়ে অত্যাচার চিনা সেনার, অভিযোগ বাবার

কয়েক দিন আগেই দেশে ফিরেছে সে। তারপরই সে জানিয়েছে, তার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Arunachal teen kicked given electric shocks in Chinese captivity

ঘরের ফেরার দিন মা-বাবার সঙ্গে অরুণাচলের কিশোর।

অরুণাচল প্রদেশের 'অপহৃত' কিশোরের উপরে অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিল চিনা সেনা। মারধর, ইলেকট্রিক শক দিয়ে কিশোর মিরম তারনকে অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তার বাবার।

Advertisment

কয়েক দিন আগেই দেশে ফিরেছে সে। তারপরই সে জানিয়েছে, তার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা। যা শুনলে সত্যিই শিউরে উঠতে হয়। সোমবার ১৭ বছরের ওই কিশোর অরুণাচলের জিডো গ্রামে তার বাড়িতে ফিরেছে। তারপরই ছেলেকে লাল-ফৌজের নিগ্রহের কথা বলা হয়েছে।

বহু টালবাহানার পর অবশেষে ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি 'অপহৃত' মিরমের বাবা ওপাং। তবে যেভাবে চিনা সৈন্যরা তাঁর ছেলের উপর অত্যাচার চালিয়েছে তাতে তিনি ব্যথিত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমার ছেলে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল। তখন কয়েকজন চিনের সেনাওকে ধরলে পালাবার জন্য ছেলে তাঁদের আঁচড়ে দেয়। পাল্টা চিনা সেনার একজন আমার ছেলেকে মাটিতে ফেলে বেশ কয়েকবার লাথি মেরেছে।'

ওপাংয়ের সংযোজন, 'চিনা সেনারা আমার ছেলেকে পিএলএ ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং ওকে তিব্বতি ভাষায় প্রশ্ন করে। তিব্বতি ভাষা না জানায় আমার ছেলে উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়। ও শুধু হিন্দি ও আদি ভাষা জানে। আমাদের আদি ভাষা আদি। আমার ছেলে হিন্দি এবং আদি বলে চিনা সেনাদের প্রশ্নের জাব দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই ভাষা চিনা সেনারা বুঝতে পারেনি। ওরা তিব্বতি ভাষায় প্রশ্ন করতেই থাকে। একসময় না বুঝতে পেরে বিরক্ত হয়ে পড়ে ওরা। পরে চিনা সেনারা আমার ছেলেকে ইলেকট্রিক শকইলেকট্রিক শকও দেয়।'

৪৯ বছর বয়সী কৃষক ওপাংয়ের দাবি, 'আমার ছেলে এখনও কষ্টে আছে। ভারতীয় সেনা ছেলের চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সেনা আদিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। দেখা যাক সেনারা কি করে।'

ওপাং জানান , ছেলে তাঁকে জানিয়েছে যে বন্দী করার সময় পর্যাপ্ত খাবারই দেওয়া হয়েছিল। তবে বেশিরভাগ সময়ই ওর চোখ বাঁধা থাকতো। অপহরণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর নির্যাতন বন্ধ হয়েছিল।

মিরম তারন নামের ওই ১৭ বছরের কিশোর কয়েকদিন আগে তার এক বন্ধুর সঙ্গে ভারত-চিন সীমান্তের লুংটা জর এলাকায় শিকারে গিয়েছিল। তখনই চিনা সেনা তাকে অপহরণ করে। মিরমের বন্ধু জনি জনি অল্পের জন্য চিনা সেনার হাত থেকে রক্ষা পায়। জনিই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আনে। পরে স্থানীয় সাংসদ তাপির গাঁও একের পর এক টুইট করে এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন। অনুরোধ করেন, দ্রুত ভারতীয় এজেন্সিগুলি সক্রিয় হয়ে মিরম তারনকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।

কেন্দ্রের নির্দেশে তৎপর হয়ে ওঠে ভারতীয় সেনা। চিনের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আবেদন জানানো হয়, ওই কিশোরকে খুঁজে বের করে প্রোটোকল অনুযায়ী তাকে ভারতে ফেরানো হোক। পরে ভারতীয় সেনার তরফে ওই কিশোরের পরিচিতি, ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি চিনকে দেওয়া হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার ওই কিশোরকে ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেয় চিনা সেনা।

এই প্রথম নয়, এর আগে ২০২০ সালে, অরুণাচল প্রদেশের উচ্চ সুবানসিড়ি জেলা থেকে পাঁচজন নিখোঁজ হয়েছিল। 10 দিন পর চিনা কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিল। সেই সময়ও, সাংসদ তাপির গাঁও এবং পাসিঘাটের কংগ্রেস বিধায়ক নিনং এরিং অভিযোগ করেছিলেন যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের অপহরণ করেছে চিনা সেনা। ফিরে এসে ওই পাঁচ জনই স্বীকার করেছিল যে, শিকার করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তাঁরা সীমান্তের ওপারে চলে গিয়েছিল, যা থেকেই বিপত্তি।

Read in English

Indian army china Arunachal Pradesh PLA
Advertisment