Arvind Kejriwal Arrested: আবগারি দুর্নীতি মামলায় খৃত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত। ১০০ কোটির দুর্নীতি! হাওয়ালার মাধ্যমে গোয়ায় ৪৫ কোটি টাকা পাঠানোর মারাত্মক অভিযোগ। সেই টাকা গোয়া নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছে। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিষয়ে এমনটাই জানিয়েছেন ইডির আইনজীবী। যদিও কেজরিওয়ালের পক্ষে উপস্থিত থেকে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, ইডিকে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের যথাযথ প্রমাণ পেশ করতে হবে। আদালতকে জানাতে হবে কেন কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি ইডির কাছে জরুরি? তিনি আদালতে বলেন, এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ চার নেতাকে গ্রেফতার করা হল। গ্রেফতার করা হয়েছে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে। ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দিল্লির মদ কেলেঙ্কারি মামলায় গতকালই গ্রেফতার হয়েছেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিন আদালতে হাজির করা হয় কেজরিওয়ালকে। ইডির পক্ষে হাজির হয়ে আইনজীবী এসভি রাজু রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে বলেছেন দুর্নীতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি। ৪৫ কোটি টাকার হাওয়ালার মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে। সেই টাকা গোয়ার নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছিল।
কেজরিওয়াল এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড
দিল্লির কথিত আবগারি দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার দুপুর ২টোয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করে ইডি। ইডি আদালতের কাছে কেজরিওয়ালের ১০ দিনের হেফাজত চায়। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ডও বলেও উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থা। ইডি জানিয়েছে যে কেজরিওয়াল দিল্লির আফগারি নীতি তৈরিতে সরাসরি জড়িত ছিলেন। পাঞ্জাব ও গোয়ার নির্বাচনের জন্য তহবিল ব্যবহার করা হয়েছে। গোয়ার নির্বাচনেই ব্যবহার করা হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি লকআপে গতকাল রাত কাটাতে হয়েছে আপ সুপ্রিমোকে। এদিকে দিল্লির মন্ত্রী অতীশি জানিয়েছেন, কেজরিওয়ালই থাকবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। জেল থেকে সরকার চালাবেন তিনি।
কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আপ কর্মীরা দিল্লির আইটিও-তে বিক্ষোভ দেখান। দিল্লি সরকারের দুই মন্ত্রী অতীশি ও সৌরভ ভরদ্বাজকে পুলিশ আটক করে। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে কেজরিওয়ালের বাড়িতে পৌঁছেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। সূত্রের খবর রাহুল গান্ধী মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
সমস্ত অভিযুক্তের সঙ্গে কেজরিওয়ালের যোগাযোগ ও সম্পর্কের কথা আদালতকে জানিয়েছে ইডি। মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সমস্ত অভিযুক্তদের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের যোগাযোগ এবং সম্পর্কের বিষয়ে আদালতকে বিশদভাবে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। ইডি অভিযোগ করেছে যে মদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করার ক্ষেত্রে কেজরিওয়ালই মূল ষড়যন্ত্রকারী।
ইডির আইনজীবী এসভি রাজু, আদালতে কেজরিওয়ালকে মদ কেলেঙ্কারির মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে বর্ণনা করেছেন। ইডি জানিয়েছে, আফগারি নীতি প্রণয়নের সঙ্গে কেজরিওয়াল সরাসরি জড়িত ছিলেন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবেন বিরোধী দলগুলির নেতারা।
বৃহস্পতিবার রাতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ইডি। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিষয়ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, 'দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে'। আম আদমি পার্টি কেজরিওয়ালের পাশে রয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের পর এখন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দাবি উঠেছে। এদিকে দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে হিন্দু সেনা। পিটিশনে বলা হয়েছে, ইডি-র হাতে গ্রেফতারের পরেও মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। হাইকোর্টে দাবি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে পদ থেকে ইস্তফা দিতে।
শুক্রবার জম্মু কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ওমর আবদুল্লাহ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “স্পষ্টতই, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার কেজরিওয়ালকে ইডি গ্রেফতার করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গেছে,”।
এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) গ্রেফতারির প্রতিবাদে সোচ্চার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। “বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের টার্গেট করে গ্রেফতার করা হচ্ছে।” কেন্দ্রের মোদী সরকারকে তুলোধনা করে X হ্যান্ডলে সোচ্চার তৃণমূল সুপ্রিমো।
মমতা এক্স-এ লিখেছেন, “জনগণের দ্বারা নির্বাচিত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানাই। আমার অটল সমর্থন ও সংহতি জানাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রীমতি সুনিতা কেজরিওয়ালের সঙ্গে কথা বলেছি। এটা আপত্তিজনক যে নির্বাচিত বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে। BJP-র সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরে CBI-ED তদন্তের অধীনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অসদাচরণ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের ওপর নির্মম আঘাত। আমাদের INDIA জোট নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবে।”