বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। বিক্ষোভকারীদের রোষে বাড়ি-ছাড়া খোদ রাষ্ট্রপতি। পদ ছেড়েও স্বস্তিতে নেই প্রধনমন্ত্রীও। তাঁর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। চূড়ান্ত আর্থিক সংকটে ধুঁকছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে সংকট থেকে দ্বীপরাষ্ট্রের পরিত্রাণের পথ এখনও অজানা। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক দিল্লিও। শ্রীলঙ্কার সার্বিক পরিস্থিতির দিকে গভীরভাবে নজর রাখছে ভারত। দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব কীভাবে তাঁদের সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ করে এখন সেদিকেই তাকিয়ে নয়াদিল্লি।
কলম্বোয় নিযুক্ত ভারতীয় কূটনীতিকরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগ ছিল কার্যত রাজাপক্ষে পরিবারের পতনের শেষের শুরু।
শনিবার রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষের বাড়িতে আছড়ে পড়ে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। তার আগে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় হাজার-হাজার বিক্ষোভকারী সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা।
সংবাদ সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট তাঁর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। শনিবার বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার পতাকা ও হেলমেট হাতে রাষ্ট্রপতির বাসভবনে ঢুকে পড়েছিলেন। স্থানীয় টিভি নিউজ নিউজ ফার্স্ট চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজ সেই ছবি দেখা গিয়েছে। গতকাল রাষ্ট্রপতির বাড়িতে এই তাণ্ডবের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা দিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘে।
সর্বদলীয় সরকারকে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আনতেই তাঁর এই পদক্ষেপ বলে টুইটে জানিয়েছেন বিক্রমাসিঙ্ঘে। কিন্তু তাতেও রোষ কমেনি জনতার। রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।
এই মুহূর্তে চূড়ান্ত আর্থিক সংকট দ্বীপরাষ্ট্রটিকে কার্যত পঙ্গু করে দিয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কোনও দলই এককভাবে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক নেতৃত্বে আসতে চাইছে না। রাজাপক্ষেদের হাতে তৈরি ব্যবস্থার জন্যই দেশের শোচনীয় হাল হয়েছে বলে দুষছেন দেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন- চরম ডামাডোল শ্রীলঙ্কায়, ইস্তফা দিলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘে
এদিকে, শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ভারত। কলম্বোর রাস্তায় সরকারের বিরুদ্ধে এমন হিংসাত্মক বিক্ষোভ কঠিন পরিস্থিতির ইঙ্গিতই করছে বলে আশঙ্কা দিল্লির। ইতিমধ্যেই দ্বীপরাষ্ট্রের সংকটে পাশে দাঁড়িয়ে একাধিক সুবিধা দিয়েছে ভারত। এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ৩.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার অর্থ সাহায্য দিয়েছে দিল্লি।