দীর্ঘ দু’বছরের করোনা (Covid 19) যুদ্ধে এবার কি তবে দাঁডি পড়েছে। দেশের রাজধানীর ঘোষণায় আশায় বুক বাঁধছেন সকলেই। দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে। সেই জন্যই কোভিড বিধি তুলে নেওয়া হচ্ছে। যদিও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই প্রসঙ্গে জানান, ”সংক্রমণ কমেছে ঠিক, কিন্তু তাও সতর্ক থাকতে হবে। সরকারও এই বিষয়ে সজাগ থাকবে। মানুষ যেন কোভিড বিধি মেনে চলেন সেই দিকে নজর রাখবে দিল্লি সরকার।”
কী কী বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হল? দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ১ এপ্রিল থেকে সব স্কুল খুলে দেওয়া হবে। পড়ুয়ারা স্কুল ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস করতে পারবে। যদিও কেজরিওয়াল জানান, ”সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর প্রসঙ্গে অভিভাবকদের মতামতকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে।” তুলে নেওয়া হবে নৈশ কারফিউ। আগামী সোমবার থেকেই দিল্লিতে আর থাকছে না নৈশ কারফিউ। যদিও মাস্ক না পরলে জরিমানা বজায় থাকছে। তবে কমছে জরিমানার অঙ্ক। মুখে মাস্ক না থাকলে ১০০০ টাকার বদলে এবার থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়াও রাত পর্যন্ত সমস্ত দোকান খোলা রাখা যাবে। যদিও কত জন ব্যক্তি একসঙ্গে একটি জমায়েতে অংশ নিতে পারবেন সেই বিষয়ে কোনও ঘোষণাই করা হয়নি।
তবে এই ছাড়গুলো কার্যকর হবে যদি পজিটিভিটি রেট ১ শতাংশের নীচে থাকে। প্রসঙ্গত, দিল্লিতে দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০০ এর নীচে। যদিও বৃহস্পতিবার দিল্লির পজিটিভিটি রেট ছিল ১.১০। অর্থাৎ পজিটিভিটি রেট একের কাছাকাছিই রয়েছে। রাজধানীতে কোভিড বিধি প্রত্যাহার কেন করা হচ্ছে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা একটি চিঠিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে জানান,”কোভিড সংক্রমণ নিম্নমুখী হচ্ছে। সেই কারণে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা ভাবা উচিত। ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখে ব্যবসা-বাণিজ্য আবার শুরু করা যেতে পারে।”
আরো পড়ুন: সংক্রমণ কমতেই ‘ব্যাগ প্যাক’ করার পথে ভ্রমণপিপাসু ভারতীয়: রিপোর্ট
এদিন দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়, ”কোভিড অতিমারীর কারণে মানুষ অনেক ব্যবসায়িক ক্ষতি সহ্য করেছেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত।” এবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ।
এদিকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় খুশি দিল্লির ব্যবসায়ীমহল। ব্যবসায়ীমহলের তরফে কেজরিওয়ালের ঘোষণাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। নিউ দিল্লি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিটিএ) সভাপতি অতুল ভার্গব জানিয়েছেন, “দীর্ঘ দিন ধরে করোনার কারণে আমাদের ব্যবসা মার খেয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের আশা খুব শীঘ্রই আমাদের ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে”।
রেস্ট্রো-বার চেইন মাই বারের ডিরেক্টর অমিত ভাসিন জানিয়েছেন, “আমাদের শিল্প গত দুই বছর ধরে মার খেয়েছে। জাতীয় রাজধানীতে কোভিড-সম্পর্কিত বিধিনিষেধগুলি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত রেস্তোঁরা এবং বার শিল্পের জন্য একটি বড় স্বস্তি। এটি ব্যবসাকে আবার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে”।
এদিকে আগামী ১লা এপ্রিল থেকে আবার স্কুল গুলি পূর্ণ ক্ষমতায় খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এপ্রসঙ্গে এক অভিভাবক জানিয়েছেন “এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ"।
তিনি বলেন স্কুল গুলি বর্তমানে সপ্তাহে একদিন অথবা দু’দিন ক্লাস করাচ্ছে সেক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সাধারণ অভ্যাস নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে স্কুল বাস গুলিও পথে নামেনি। আশা করি আগামী এপ্রিল থেকেই সব কিছু ঠিক ঠাক হয়ে যাবে”।