Advertisment

হিংসায় পড়শি রাজ্যে আশ্রয় ১২হাজার গৃহহীন, কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্তি মিজোরাম সরকারের

বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে রয়েছে ১৫০০-এর বেশি শিশুও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Manipur News, Manipur Violence, Mizoram

হিংসায় পড়শি রাজ্যে আশ্রয় ১২হাজার গৃহহীন, কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্তি মিজোরাম সরকারের

 ২ মাসের বেশি সময় ধরে জাতিগত হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। এর মাঝেই মণিপুর থেকে পড়শি রাজ্য মিজোরামে পৌঁছেছে্ন ১২হাজারের বেশি অসহায় মানুষজন। বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে রয়েছে ১৫০০-এর বেশি শিশুও। সাহায্য’র কাতর আর্তি মিজোরাম সরকারের।

Advertisment

চলতি মাসের শুরুর দিকে, মিজোরামের ক্যাবিনেট মন্ত্রী রবার্ট রায়টের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মণিপুরের বাস্তুচ্যুতদের সাহায্য’র জন্য তহবিলের দাবিতে দিল্লিতে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দেখা করেন।  

মিজোরাম সরকার হিংসা-কবলিত মণিপুরের বাস্তুচ্যুত মানুষদের সাহায্যের জন্য ফের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। মিজোরাম সরকার বলেছে ৩রা মে থেকে শুরু হওয়া জাতিগত হিংসার কারণে মণিপুর ১২,০০০ এরও বেশি মানুষ রাজ্যের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। মে মাসে, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা জাতিগত হিংসায় বাস্তুচ্যুতদের সুবিধা প্রদানের জন্য কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি চিঠিও লিখেছিলেন, কিন্তু প্রায় দুই মাস পরেও মিজোরাম সরকারকে কোন রকম সাহায্য দেয়নি কেন্দ্র।  

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, হিংসা কবলিত মণিপুর থেকে ১২ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে পড়শি রাজ্য মিজোরাম। তাদের বেশিরভাগই ত্রাণ শিবিরে এবং কিছু মানুষ তাদের আত্মীয়দের কাছে রয়েছেন। মিজোরামের হোম কমিশনার লালেংমাওইয়া বলেছেন, এখন পর্যন্ত আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এক টাকাও সাহায্য হিসেবে পাইনি। আমরা গীর্জা, সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ পরিষেবা প্রদান করছি।

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি অবিলম্বে কোন পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে দুসপ্তাহের মধ্যেই জনগণকে সাহায্য করার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব দেখা দেবে। বাজেট খুবই কম হলেও জনগণকে  সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মিজোরাম সরকার। মিজোরামের স্কুলগুলোতে অনেক পড়ুয়াকে ইতিমধ্যে ভর্তি করানো হয়েছে। মণিপুরে এখনও শান্তি ফিরে আসেনি। অনেক জেলায় কারফিউ বলবৎ রয়েছে, ইন্টারনেট ও স্কুল সবই বন্ধ।

রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে শুধুমাত্র আইজল জেলাতেই চার হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এর জন্য, ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমএ)১২টি ত্রাণ শিবির খুলেছে। কেন্দ্রীয় ওয়াইএমএ-এর সহকারী সেক্রেটারি জানিয়েছেন যে সংস্থাটি রাজ্য সরকারের কাছে আরও ত্রাণ শিবির খোলার আবেদন জানিয়েছেন।

মণিপুরে হিংসা শুরু হওয়ার পর, রাজ্যের প্রায় ৩৭০০০ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ পড়শি রাজ্যে চলে গেছে। রাজ্যের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ মানুষ মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত, মিজোরামের মণিপুর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকের সংখ্যা ছিল ১২,১৬২ যার মধ্যে ২৯৩৭ জন ৩৫টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এবং বাকিরা তাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন।

বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে রয়েছে ১৫০০ টিরও বেশি শিশু। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা। মিজোরাম সরকার তাদের স্কুলে ভর্তি করেছে যাতে এই শিশুদের শিক্ষার অধিকার কোন কারণেই নষ্ট না হয়। মণিপুরে হিংসা অব্যাহত থাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে মিজোরাম সরকার।

Manipur Violence
Advertisment