Advertisment

আসানসোলের খুশির মৃত্যুতে জনস্বার্থ মামলা, মেলেনি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

আসানসোলে ছ’মাসের খুশির মৃত্যুতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, ডিজিপি, এবং লালবাজারে চিঠি পাঠাচ্ছেন খুশির বাবা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
asansol khushi death

মায়ের কোলে ছোট্ট খুশি, অন্নপ্রাশনের দিন। ছবি- পরিবার সূত্রে।

কেটে গেছে দুমাসেরও বেশি সময়, এখনও বিচারের অপেক্ষায় আসানসোলের খুশির বাবা-মা। ধর্না, অনশনের পর এবার হাইকোর্টে গেল খুশির মৃত্যুর ঘটনা। চিকিৎসার গাফিলতিতে ছ’মাসের শিশুর মৃত্যুতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল। কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। জুন মাসের ৪ তারিখ প্রধান বিচারপতির এজলাসে এ মামলার শুনানি হবে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন খুশির বাবা অক্ষয় কুমার ঘোষ।

Advertisment

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে আসানসোলের এইচএলজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে, যাদের কাছ থেকে এখনও মেয়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মেলেনি বলে দাবি করেছেন অক্ষয়বাবু। ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েই মূলত তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন খুশির বাবা। সিএমওএইচের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অক্ষয়বাবু। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের অঙ্গুলিহেলনেই কাজ করছেন সিএমওএইচ। খুশিকে তিনবার চিকিৎসক দেখেছেন, অথচ রিপোর্টে সিএমওএইচ ১৩ বার দেখার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন, EXCLUSIVE: ফের চিকিৎসায় গাফিলতি! অকালমৃত্যু খুশির, আসানসোলে টানা ধর্নায় বাবা-মা

এখনও খুশির মৃত্যুতে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অক্ষয়বাবু। আসানসোল উত্তর থানা শুধুমাত্র জেনারেল ডায়েরি নিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে এবার প্রশাসনের শীর্ষ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তিনি এবং তাঁর পরিবার। আগামী সোমবার রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, ডিজিপি, এবং লালবাজারে চিঠি পাঠাচ্ছেন খুশির বাবা।

এর আগে মেয়ের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাসপাতালের গেটের সামনে প্রায় এক মাস টানা ধর্নায় বসেছিলেন খুশির বাবা-মা অক্ষয় কুমার এবং রূপা ঘোষ। ধর্না কর্মসূচির মধ্যেই ১৩ এপ্রিল একদিনের অনশনেও বসেছিলেন অক্ষয়বাবুরা। পরে অনশন চলাকালীন খুশির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন, যার পর পুলিশ-প্রশাসনের আশ্বাসে অনশন উঠে যায়।

আরও পড়ুন, EXCLUSIVE: মেয়ের মৃত্যুতে আমরণ অনশনে বসে অসুস্থ বাবা

চলতি বছরের ২০ মার্চ আচমকা জ্বর হওয়ায় খুশিকে প্রথমে আসানসোলে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান অক্ষয়-রূপা। ইএসআই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকার দরুণ এইচএলজি হাসপাতালে আনেন মেয়েকে। সেখানে বিকেল ৩ টে ৫৮ মিনিটে খুশিকে ভর্তি করা হয়। এরপর সন্ধে ৭ টা নাগাদ হঠাৎই মেয়ের অবস্থা ভাল নয় বলে অক্ষয়বাবুকে ফোনে জানান তাঁর স্ত্রী। হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মেয়ের শরীর ফুলে গেছে এবং গায়ে র‌্যাশ বেরিয়েছে। রূপা দেবীর অভিযোগ, একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই মেয়ের শরীর ফুলে যায় ও র‌্যাশ বেরিয়ে যায়।

এরপর খুশিকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানেই বড়সড় বিপর্যয়ের আঁচ পান খুশির পরিবার, এবং তাঁদের দাবি, মেয়েকে মৃত অবস্থাতেই আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০ টা ৫ মিনিটে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয় খুশির পরিবারকে। নিউমোনিয়ায় খুশির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে সার্টিফিকেটে। যদিও অক্ষয়ের বক্তব্য, মেডিকেয়ারে মেয়ের এক্স-রে রিপোর্টে নিউমোনিয়ার কোনও লক্ষ্মণের কথা বলা নেই। শুধু তাই নয়, ওই হাসপাতালে চিকিৎসক অমিত মণ্ডলের অধীনে খুশিকে ভর্তি করা হলেও একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান মেয়ের চিকিৎসা করেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন অক্ষয়বাবু।

health asansol
Advertisment