বিপন্ন সময়ে দুই ইন্ডাস্ট্রি সতীর্থকে পাশে পেলেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিণতির অবনতির কথা বলে জাতিয়তাবাদী রোষের মুখে পড়েছেন নাসিরুদ্দিন। এবার তাঁর সমর্থনে মুখ খুললেন পরিচালক মধুর ভান্ডারকর এবং অভিনেতা আশুতোষ রাণা। একদিকে রাণা বলেন, নিজের মনের কথা বলার জন্য কাউকে সমাজের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত নয়। অন্যদিকে ভান্ডারকরের বক্তব্য, গণতন্ত্রে নিজের মত প্রকাশের অধিকার সবার আছে।
সম্প্রতি বুলন্দশহর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে নাসিরুদ্দিন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে দেশে "একজন পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর চেয়ে গরুর মৃত্যুর গুরুত্ব বেশি", এবং পরিস্থিতির "শিগগিরই কোনো উন্নতি হবে" বলে তিনি মনে করেন না। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে বুলন্দশহরের হিংসায় তথাকথিত গোহত্যার জেরে উন্মত্ত জনতার হাতে প্রাণ হারান এক পুলিশ অফিসার।
আরো পড়ুন: জাত-ধর্মের পরে পেশাগত পরিচয় নিয়েও সংকটে হনুমান!
নাসিরুদ্দিনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া না দিয়ে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলে রাণা বলেন, "নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলের আছে। কেউ নিজের মনের কথা বলা মানেই কি তাঁর সামাজিক বিচার শুরু হয়ে যাবে? বরং আমাদের উচিত, তাঁর বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনা।" দিল্লিতে গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাণা আরো বলেন, "কেউ মনের কথা বললে তা নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়, তাতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হবে।"
একই সুরে ভান্ডারকর বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশের সমস্ত নাগরিকের "অধিকার রয়েছে নিজের ভাবনাচিন্তা ভাগ করে নেওয়ার"। ৫০ বছর বয়সী এই পরিচালকের কথায়, "কথা বলার অধিকার সবার আছে। আমরা গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক। আমার মনে হয় না কোনো ভয় কাজ করছে এখানে। ভারতে সবার সমান অধিকার, এবং তিনি তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আমাদের দেশের বিশেষত্ব হলো সবাই নিজের মতামত জানাতে পারেন।"
অবশ্য ভান্ডারকর এও যোগ করে দেন, "আমার মনে হয় না কোনো সমস্যা বা অসহিষ্ণুতা রয়েছে।"
আরো পড়ুন: ‘‘উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসেবেই বলেছি, কী ভুল করেছি?’’
প্রসঙ্গত, ভান্ডারকরের ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি 'ইন্দু সরকার', যার প্রেক্ষিত ছিল ১৯৭৫-৭৭ সালের জরুরি অবস্থা, কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে বিক্ষোভের সৃষ্টি করে। তাঁদের দাবি ছিল, ছবিটি তাঁদের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছে। চলতি বছরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী নেটফ্লিকসে প্রচারিত 'সেক্রেড গেমস' ওয়েব সিরিজে তাঁর প্রয়াত পিতা রাজীব গান্ধীর প্রতি তথাকথিত নেতিবাচক কিছু উল্লেখ বাদ দেওয়ার দাবি খারিজ করে দেন। এর পরেই তাঁর সামনে একটি প্রশ্ন রাখেন ভান্ডারকর।
টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে পরিচালক দাবি করেন, কংগ্রেস কর্মীরা 'ইন্দু সরকার' ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগে তাঁকে হুমকি দেন। রাহুলের উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, "প্রিয় রাহুল গান্ধী জি, এই দেখুন আপনার দলের কর্মীদের হাতে আমার লাঞ্ছনার বিবরণ...আমাকে বিভিন্ন শহরে পাঁচতারা হোটেল থেকে শুরু করে সেন্সর বোর্ডের অফিস পর্যন্ত তাড়া করা হয়। আমি আপনার সাহায্য প্রার্থনা করেছিলাম, কিন্তু আপনি কোনো পদক্ষেপ নেন নি।"