আদালত আগেই বেকসুর খালাস করেছিল, এবার আসিয়া বিবি দীর্ঘ আট বছরের কারা জীবনে ইতি পড়ল। তাঁকে মুলতান শহরের কারাগার থেকে ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরই আইনজীবী। পাকিস্তানের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী আসিয়া বিবিকে (আসিয়া নরিন) ইসলাম 'ধর্ম অবমাননা'র অভিযোগ থেকে ৩১ অক্টোবর মুক্তি দিয়েছিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। বিবিসি-র খবর অনুযায়ী, ছাড়া পেয়ে ইতিমধ্যে বিমানেও চেপে পড়েছেন আসিয়া। একাধিক দেশ তাঁকে আশ্রয় দিতে চাইলেও এই মুহূর্তে আসিয়ার গন্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায়নি।
২০০৯ সালে পাকিস্তানের পঞ্জাবের এক ফল বাগিচায় সহকর্মীদের সঙ্গে ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন আসিয়া। অভিযোগ ছিল, তিনি মহম্মদের প্রতি 'অসম্মানজনক' শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ জন্য ২০১০ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশও দেওয়া হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন আসিয়া এবং শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে নির্দোষ হিসাবে মুক্তি পান।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান। প্রধানত সে দেশের মৌলবাদী ও রক্ষণশীল ইসলাম সমাজ চরম বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। পরিস্থিতি এমনই হয়ে যায় যে পাকিস্তানের নব নির্বাচিত সরকার এক রকম তাদের সামনে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়। সরকারের তরফে বিক্ষোভকারীদের বলা হয় যে, এই সুপ্রিম নির্দেশের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল হলে সরকার সেটির বিরোধিতা করবে না। এমতাবস্থায় আসিয়ার পরিবার স্পষ্ট জানায় যে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আশ্রয় চেয়ে আবেদন জানাতেও দেখা যায় এই পরিবারকে।
ইমরান সরকার বিক্ষোভকারী ইসলাম সংগঠনগুলির দাবি মোটের উপর মেনে নেবে বললেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে ছাড়ছে না বিভিন্ন দল। তেহরিক-ই-লাবায়েক-এর মুখপাত্র ইজাজ আসরাফি যেমন বলেছেন, "আসিয়া বিবিকে মুক্তি দিয়ে সরকার আমাদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করল। শাসক যে অসৎ সেটাই প্রমাণ হল"। তবে ইমরান খানের সরকারের দাবি, আসিয়া বিবি যাতে দেশ না ছাড়তে পারেন, সে জন্য সবরকম আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
Read the full story in English