থানায় আগুন দেওয়ার একদিন পরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ করল অসমের নাগাঁও প্রশাসন। বহু পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে দিল প্রশাসন। শনিবার দুপুরে স্থানীয় সালোনাবারি গ্রামের ৪০ জন গ্রামবাসী বটদ্রব থানার একাংশে অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় এক বাসিন্দার পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় উন্মত্ত গ্রামাবাসী এই কাণ্ড ঘটায়। তারই বদলা নিল প্রশাসন।
নাগাঁও জেলা প্রশাসন শনিবারই বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায়। থানার ওসিকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। রবিবার সকালে গ্রামে এসে পৌঁছায় বুলডোজার। থানা থেকে ৬ কিমি দূরে এই গ্রামে বুলডোজার চালিয়ে একের পর এক ঘর ভেঙে দেয় প্রশাসন। তাদের দাবি, থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
অসম পুলিশের ডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জি পি সিং দ্য় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "৪০ জন গ্রামবাসী এই অপরাধ করে। আমরা সাতজনকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছি। ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। থানায় মৃত্যুর ঘটনায় আমরা অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে থানায় আগুন দেওয়া হবে। অগ্নিসংযোগ বরদাস্ত করা হবে না। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে দোষীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।"
এই ঘটনায় কংগ্রেস সাংসদ আবদুল খালেক সরকারকে তোপ দেগেছেন। বলেছেন, "আমরা থানায় হামলাকে সমর্থন করছি না। কিন্তু ঘর ভেঙে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান।"
পুলিশ জানিয়েছে, সফিকুল ইসলাম নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে মদ্যপ অবস্থায় থানায় নিয়ে আসা হয় শুক্রবার। কিন্তু পরের দিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি, সফিকুলের স্ত্রী তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু নিহতের স্ত্রীর দাবি, হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের আশঙ্কা! কেরলের ১০ জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি
সফিকুলের পরিবারের দাবি, থানার পুলিশ তাঁদের কাছে ১০ হাজার টাকা চায় সফিকুলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। পরেরদিন সকালে টাকা নিয়ে থানায় গিয়ে স্ত্রী জানতে পারেন সফিকুলকে নাগাঁও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, সফিকুলের মৃত্যু হয়েছে। এর পর দুপুরে উন্মত্ত গ্রামবাসী থানা ঘেরাও করে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সেই ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।