আসামের তিনসুকিয়ায় এক তৈলকূপে আগুন লাগার ঘটনার একদিন পর, অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের দুই অগ্নিনির্বাপণকর্মীর মৃতদেহ নিকটবর্তী এক পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তিনসুকিয়ার পুলিশ সুপার শিলাদিত্য চেটিয়া বলেছেন, “আমাদের সন্দেহ ওঁরা আগুন লাগার পর নিজেদের বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, তবে আমরা আরও তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি”। তিনি আরও জানান অন্য চারজন সামান্য আহত হয়েছেন।
মৃত দুজনের নাম টেকেশ্বর গোহাই ও দুর্লভ গগৈ। এসপি জানান “মৃতদেহ উদ্ধার করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।”
সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য আটকাতে টেন্ডার সরকারি সংস্থার
অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের মুখপাত্র ত্রিদিব হাজারিকা বলেছেন, ৩৫ বছরের দুর্লভ গগৈ আসামে জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ওআইএল এফসি-র প্রাক্তন গোলকিপার ছিলেন। হাজারিকা বলেন, “ওঁর বাড়ি ছিল নামরূপে, আর ৫৫ বছরের টেকেশ্বর গোহাই চাবুয়ার বাসিন্দা ছিলেন। দুজনেই ছিলেন বিবাহিত।”
মঙ্গলবার বিকেলে বাঘজান ৫ কুয়োতে আগুন লাগে। ডিব্রু সাইখোয়া জাতীয় উদ্যানের কাছে অবস্থিত এই তৈলকূপে ১৪ দিন আগে প্রথমবার হঠাৎ প্রচুর পরিমাণে গ্যাস বেরোতে থাকে। রবিবার সিঙ্গাপুরের সংস্থা অ্যলার্ট এ ব্যাপারে সাহায্য করতে আসাম পৌঁছয়। কিন্তু হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে এক বিশেষজ্ঞের বক্তব্য অনুসারে গ্যাস বেরোনোর ঘটনায় সবসময়েই আগুন লাগার ঝুঁকি থাকে। তিনি বলেন, “এই গ্যাস অত্যন্ত দাহ্য হয় এবং সামান্য স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুন ধরে যেতে পারে।”
কীভাবে আগুন লাগল সে নিয়ে তৈল সংস্থার পক্ষ থেকে মুখ খোলা না হলেও, এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “তেলের কূপ পরিষ্কার করার সময়ে আগুন লেগেছে।”
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে, আগুন নিকটস্থ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে বুধবার তেল সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগুন আর ছড়াচ্ছে না। সংস্থার তরফ থেকে ত্রিদিব হাজারিকা বলেন, “পার্শ্ববর্তী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও তৈলকূপে আগুন জ্বলছে।” তিনি বলেন, প্রাকৃতিক কারণে এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের সাহায্যে আগুন ছড়িয়ে পড়া আটকানো গিয়েছে।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দাদের ১২টি ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, “গতকাল যখন আগুন ছড়ায় তখন আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা তৈল সংস্থার গাড়িতে ইট ছোড়েন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।”
পরিস্থিতি নজরে রাখছেন প্রধানমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে কথা বলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার আসাম সরকারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক বিবৃতি অনুসারে পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
PM @narendramodi spoke to Assam CM Shri @sarbanandsonwal to discuss the situation in the wake of the Baghjan fire tragedy. PM assured all possible support from the Centre. The situation is being monitored closely.
— PMO India (@PMOIndia) June 10, 2020
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও টুইট করে জানিয়েছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর এ নিয়ে কথা হয়েছে।