পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসমে শনিবার প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ চলছে। এদিন এই দফায় পড়শি রাজ্যে ভোট পড়েছে প্রায় ৭২%। ইতিমধ্যে অসমে ক্ষমতা দখলে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এনে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে প্রচারে ঝড় তুলেছে অসম বিজেপি। একইভাবে কংগ্রেসও ঝাপিয়েছে এনআরসি প্রশ্নে বিজেপিকে বিঁধে ৫ বছর পর ক্ষমতায় ফিরতে। এই দুই রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যেই তিন দফায় সে রাজ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যার প্রথম দফা শনিবার সকাল ৮টা-বিকেল ৫টা পর্যন্ত অসমের ৪৭টি বিধানসভায় চলছে ভোট গ্রহণ। এদিন মোট ২৬৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য ব্যালট বন্দি হবে। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুখ অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বোরা।
প্রথম দফায় অসমে ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট পরিচালনায় নামান হয়েছে। ১২ জেলার মোট ১১,৫৩৭টি বুথে চলছে ভোটগ্রহণ। উপদ্রুত এলাকায় গত একমাস ধরেই চলেছে বিএসএফ, অসম রাইফেলস এবং রাজ্য পুলিশের কড়া নজরদারি। আগামি ২ মে, বাকি ৪ রাজ্যের সঙ্গেই অসমে ভোট গণনা।
রাত পোহালেই বাংলা ও আসামে প্রথম দফার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আসামবাসীর জন্য একটি ভিডিও বার্তায় আবেদন রাখলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। শুক্রবার তিনি ভিডিও বার্তায় বললেন, আসামকে ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষার ভিত্তিতে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে। দেশের গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকারকে সম্মান দিয়ে এমন সরকার নির্বাচন করুন যারা ভারতের সংবিধানকে মর্যাদা দেয়। এই বার্তা থেকে স্পষ্ট যে, আসামে বিজেপি সরকারকে হারানোর আর্জি জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, শনিবার প্রথম দফায় আসামের ৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ রয়েছে। ১৯৯১ থেকে ২০১৯, দীর্ঘ ২৮ বছর আসাম থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ হয়েছেন মনমোহন সিং। তিনি বলেছেন, এমন সরকারের জন্য ভোট দিন যে নাগরিকদের জন্য ভাবে। সমস্ত সম্প্রদায়ের কথা ভাবে। এমন সরকারের জন্য ভোট দিন যারা অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে আসামকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে ফের চালিত করবে।
তিনি দীর্ঘদিন আসামে হিংসা ও অশান্তির কথা উল্লেখ করেছেন। তারপর ২০০১-২০১৬ পর্যন্ত কংগ্রেসের তরুণ গগৈয়ের নেতৃত্বে যেভাবে আসাম শান্তি ও উন্নয়নের নয়া দিশা পেয়েছিল তাও মনে করিয়ে দেন মনমোহন। তিনি বলেছেন, বর্তমানে আসামে সমাজ ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষার ভিত্তিতে বিভক্ত হয়ে গেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। রাজ্যে একটা ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। অপরিকল্পিত নোটবন্দি এবং জোর করে কার্যকর করা জিএসটির জন্য অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।