Advertisment

Assam Lynching: গণপিটুনিতে জোড়া মৃত্যু! এখনও থমথমে এলাকা

ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন প্রায় নিথর হয়ে পড়েছেন অভিজিৎ, কোনওরকমে টিঁকে ছিল নীলোৎপলের প্রাণটুকু। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
assam lynching, অসমে গণপিটুনি

এই গাড়িতে করেই যাচ্ছিলেন অভিজিৎ ও নীলোৎপল। ছবি- অভিষেক সাহা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

অভিষেক সাহা

Advertisment

‘‘গাড়ির মধ্যে একটা বাচ্চা রয়েছে’’, এই কথাটা যে একটা ভয়ঙ্কর মর্মান্তিক ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা বোধহয় খুব একটা ঠাহর করতে পারেননি অসমের কার্বি আংলং জেলার পাঁজুরি কাছারি গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেই। শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ৭টা। কালো রঙের এসইউভি নিয়ে যাচ্ছিলেন অভিজিৎ নাথ ও নীলোৎপল দাস। কে জানত, যে এসইউভি-তে সেটা তাঁদের শেষ সফর ছিল। অভিজিৎ ও নীলোৎপল একটা বাচ্চাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছেন, কয়েক সেকেন্ডে একথা চাউর হতেই রে রে করে ওঠে স্থানীয় জনতা। গাড়ি থামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় দুজনকে। ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন প্রায় নিথর হয়ে পড়েছেন অভিজিৎ, কোনওরকমে টিঁকে ছিল নীলোৎপলের প্রাণটুকু। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

না, কোনও বাচ্চা গাড়ির মধ্যে ছিল না, একথা জানিয়েছেন স্থানীয়দের একাংশই। ফোনে গুজব ছড়িয়েছিল যে, অভিজিৎ ও নীলোৎপল একটি বাচ্চাকে অপহরণ করে গাড়িতে করে পালাচ্ছেন। এই গুজব দাবানলের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যার জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হতে হয় অসমের ওই এলাকাকে। যে পড়শি গ্রাম থেকে ওই ফোন করা হয়েছিল, সেখানে আগে জলপ্রপাত দেখতে গিয়েছিলেন অভিজিৎ ও নীলোৎপল। ফোন ও মেসেজে মিথ্যে খবর ছড়ানোর কথা মেনে নিয়েছে পুলিশও। কে বা কারা এর পিছনে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন, Uttar Pradesh: শিশুমৃত্যুতে সাসপেন্ডেড চিকিৎসক কাফিল খানের ভাই গুলিবিদ্ধ

ঘটনাস্থলের পাশেই থাকেন ৫৫ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়া। তিনি জানালেন যে, আশপাশের গ্রাম থেকে বহু লোকেরা এসে জড়ো হয়েছিল। কেউ কেউ এ ঘটনা রোখার চেষ্টাও করেছিলেন। প্রায় ৫০০ মতো লোক জড়ো হয়েছিল বলে মত ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার। আশপাশের গ্রাম থেকে যে বহু মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিল, সেকথা স্বীকার করেছে পুলিশও।

গণপ্রহারের সময়ে অভিজিৎ ও নীলোৎপল বারবার জানিয়েছিলেন যে তাঁরা অসমিয়া। তা সত্ত্বেও তাঁদের আকুতিতে কান দেয়নি জনতা। গাড়ির দরজা খুলে কোনও বাচ্চাকে দেখতে না পাওয়া গেলেও নিরস্ত হয়নি তারা। কেউ কেউ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও তা বিফলেই গেছে। গাড়ির মধ্যে যখন কোনও বাচ্চা মেলেনি, তখন কেন এভাবে মারধর করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বললেন, যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘‘ আমরা সারা রাত ধরে কেঁদেছি।’’

ঘটনার দু’দিন পর এখনও থমথমে এলাকা। গোটা এলাকা কার্যত জনশূন্য। ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

national news
Advertisment