Advertisment

আসাম এনআরসি: "বিদেশি" দুলাল পালের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার পরিবারের

দুলাল পালের ভাইবোন ও পরিবারের সকলের নাম নাগরিকপঞ্জিতে রয়েছে এবং তাঁদের পরিবারের ১৯৬০ থেকে নথি রয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Assam NRC, NRC

ফাইল ছবি

আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পে মানসিক ভাবে অসুস্থ একজনের মৃ্ত্যুর ঘটনার পর কয়েকদিন কেটে গেলেও তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁর মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন। দুলাল পাল নামের ওই ব্যক্তিকে বেআইনি বিদেশিদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল।

Advertisment

২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর থেকে তেজপুরের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল দুলাল পালকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে অসুস্থতার জন্য গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

দুলাল পালের আত্মীয়রা বাংলাদেশের বেআইনি বিদেশির মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করে বলেছেন এই মৃতদেহ পরিবারের হাতে না দিয়ে সে দেশেই পাঠিয়ে দেওয়া হোক।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়ে মৃতের আত্মীয় সাধন পাল বলেন, "পুলিশ মঙ্গলবার এসে মৃতদেহ আমাদের হাতে তুলে দেবার জন্য আমাদের দিয়ে একটি ফর্মে সই করাতে চায়। সে ফর্মে দুলাল পালকে ঘোষিত বিদেশি বলা রয়েছে এবং তাঁর ঠিকানার জায়গা খালি রাখা হয়েছে। আমি বলেছি, আগে ঠিকানার জায়গা পূরণ করতে হবে... ঠিকমত কাজ করলে ওদের তো বেআইনি বাংলাদেশির মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর কথা। আমাদের কাছে এসেছে কেন?"

সাধন এর আগে জানিয়েছিলেন দুলাল পালের ভাইবোন ও পরিবারের সকলের নাম নাগরিকপঞ্জিতে রয়েছে এবং তাঁদের পরিবারের ১৯৬০ থেকে নথি রয়েছে।

আসাম কংগ্রেসের সভাপতি রিপুন বোরা মঙ্গলবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।

পরিবারের লোকজনদের এ ভূমিকায় কর্তৃপক্ষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। শোণিতপুরের ডেপুটি কমিশনার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "হ্যাঁ, পরিবারের লোকজন সত্যিই মৃতদেহ নিতে চাইছে না। আমরা ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করছি- আমাদের আধিকারিকরা ওঁদের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু ওঁরা কিছুতেই মৃতদেহ নিতে চাইছেন না।"

তিনি আরও বলেন, "পরিবারের লোকেরা বলছে ওঁকে আগে ভারতীয় নাগরিক বলে ঘোষণা করতে হবে, তারপরেই ওঁরা মৃতদেহ নেবেন। কিন্তু এ তো আমার হাতে নয়। ওঁকে বিদেশি ঘোষণা করেছে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল।"

ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, "প্রশাসনের নিজের উদ্যোগে দাহ করা সহজ নয়। উনি ভারতীয় নাগরিক নন। আমি দাহ করার অনুমতি দিতে পারব না। পরিবারকে দেহ নিতেই হবে।"

বর্তমানে আসামে ৬টি ডিটেনশন সেন্টার রয়েছে। কিন্তু সেগুলি এখন জেলা সংশোধনাগারে অবস্থিত, যেখানে সর্বমোট ১০০০ লোক রয়েছে। সপ্তম সেন্টারটি কেবলমাত্র বেআইনি বিদেশিদের জন্য, যা গোয়ালপাড়া জেলার মাটিয়ায় নির্মাণরত।

সরকারি তথ্য বলছে, গত তিন বছরের বেশি সময়ে আসাম ফরেনার্স ট্রাইবুনাল দ্বারা বেআইনি বিদেশি ঘোষিত হবার পর ডিটেনশন সেন্টারে মারা গিয়েছেন ২৪ জন।

nrc
Advertisment