আসাম এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম উঠবে না, তাঁরা আবেদন করার জন্য ১২০ দিন সময় পাবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। এনআরসি আইন অনুসারে এই সময়সীমা ৬০ দিন। তবে মন্ত্রক জানিয়েছে, অতিরিক্ত সময়সীমা বরাদ্দ করার জন্য আইনে সংশোধনী আনা হবে।
এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৩১ অগাস্ট।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "যাঁদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়বে, তাঁদের পক্ষে ধার্য সময়সীমার মধ্যে আবেদন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। সে কারণে এ ব্যাপারে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদনের সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইনেও।"
আরও পড়ুন, আসাম এনআরসি: কেন তেজপুর জেলে পচছেন আমিলা শাহ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একই সঙ্গে জানিয়েছে, যাঁরা আইনি পরিষেবা নিতে অপারগ, তাঁদের আইনি সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার।
শঙ্কার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, "এনআরসি-তে নাম না উঠলেই তিনি বিদেশি ঘোষিত হবেন, এমন নয়। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, "প্রতিটি ব্যক্তি, যাঁদের নাম চূড়ান্ত এনআরসি-তে নেই, তাঁরা সে নিয়ে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদন করতে পারবেন। ১৯৪৬ সালের বিদেশি আইন ও ১৯৬৪ সালের বিদেশি (ট্রাইবুনাল) নির্দেশিকা মোতাবেক কেবলমাত্র ফরেনার্স ট্রাইবুনালই কোনও ব্যক্তিকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। ফলে, এনআরসি-তে নাম না থাকলেই কোনও ব্যক্তি বিদেশি ঘোষিত হবেন না।"
আরও পড়ুন, ফরেনার্স ট্রাইবুনাল কী ভাবে কাজ করে
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তালিকাছুটরা তাঁদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার যথেষ্ট সুযোগ পাবেন এবং মন্ত্রকের তরফ থেকে এ ব্যাপারে তাঁদের পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এনআরসি তালিকাছুটদের সুবিধার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গায় এরকম ট্রাইবুনাল তৈরি করা হচ্ছে। তালিকাছুট দরিদ্র মানুষদের আইনি সহায়তা দেবার জন্য রাজ্য সরকার ব্যবস্থা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
গত সোমবার চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে সোমবার পর্যালোচনা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পর্যালোচনা বৈঠকে হাজির ছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গুপ্তা এবং আসাম ও কেন্দ্রীয় সরকারের আমলারা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে এনআরসি বিষয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা হয়েছে।
সোমবারের বৈঠকের পর সোনওয়াল জানিয়েছিলেন, সরকার এনআরসি প্রকাশের পর আইন প্রণয়ন করবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য রাজ্য সরকারের মূল্যায়ন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হবে।
এর আগে যে খসড়া এনআরসি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ৪০ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে।
Read the Full Story in English