অসমে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়ে। রবিবার পার্বত্য রাজ্যের বিভিন্ন অংশে জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। জাতীয় জল কমিশন (সিডব্লিউসি)-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, জোড়হাট জেলার নেমাতিঘাটে ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। কামপুর (নগাঁও) জেলায় কপিলি এবং কামরূপ জেলার পুথিমারিও বিপদসীমা লঙ্ঘন করেছে। বিভিন্ন স্থানে ব্রহ্মপুত্র-সহ কয়েকটি নদীতে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা, সেতু এবং স্কুলও জলে তলিয়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত অসমের ১১টি জেলার ৩৭,৫৩৫ জন লোক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ১৪,৬৭৫ জন মহিলা ও ৩,৭৮৭টি শিশুও রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে লখিমপুর জেলার। সেখানকার ২৩,৫১৬ জন বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে গোটা অসমে ১১টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তার মধ্যে আটটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে লখিমপুরেই।
ইতিমধ্যে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকরা। গোলাঘাট এবং নওগাঁও জেলাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা জাতীয় উদ্যানের জলাশয়গুলো ইতিমধ্যে বৃষ্টির জলে পূর্ণ হয়ে গেছে। বনকর্মীদের কাজ চালানোর জন্য দেড়শো হস্তচালিত নৌকো, ১০টি মোটর বোট এবং ভাসমান শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিপদসংকুল পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অসম বন দফতরের কাছে আরও কর্মী চেয়ে রেখেছে কাজিরাঙা অভয়ারণ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন- কেলেঙ্কারিতে কাঁপছে কেদারনাথ! ফাঁস করলেন খোদ পুরোহিত, ব্যাপক চাঞ্চল্য দেবভূমে
অসম বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে অন্ততপক্ষে ৭৭টি গ্রাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। জলে তলিয়ে গিয়েছে কমপক্ষে ২০৯.৬৭ হেক্টর জমি। প্রবল বৃষ্টিতে পার্বত্য অসমের বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। দিমা হাসাও এবং কামরূপ জেলায় ধসে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কামরূপে আবার ধসের জেরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গুয়াহাটির শোণিপতের ধীরেনপাড়া এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম মুখতার আলি। অসম বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে। তবে, বন্যায় এখন পর্যন্ত অসমে কোনও মৃত্যুর খবর নেই।