করোনা অতিমারীর জেরে গত এক বছরে প্রায় ২ হাজার কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে স্টেশন মাস্টার-সহ বহু ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারও রয়েছেন। দৈনিক হাজারেরও বেশি কর্মী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় পরিষেবা চালু রাখার বিষয়ে নাজেহাল ভারতীয় রেল। সোমবারই রেল মন্ত্রকের তরফে এই উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান জানানো হয়েছে।
রেলওয়ে বোর্ডে চেয়ারম্যান সুনীত শর্মা জানিয়েছেন, গত হছর মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত করোনায় ১৯৫২ জন রেলকর্মী মারা গিয়েছেন। অন্তত ৪ হাজার বেডে কর্মী এবং তাঁর পরিজনরা ভর্তি রয়েছেন। রেল তো আর অন্য রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের থেকে আলাদা নয়। আমাদেরও করোনা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মালপত্র এবং যাত্রী পরিবহণ করতে হবে। দৈনিক হাজার খানেক কর্মী আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে রেল হাসপাতালে বেড বাড়ানো হয়েছে। অক্সিজেন প্ল্যান্টও তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের খেয়াল রাখা হচ্ছে।
অতিমারীর জেরে ১১৩ জন স্টেশন মাস্টারের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ দেশে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর। এমনটাই জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া স্টেশন মাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। আরপিএফের অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন রেল বোর্ড এবং অন্যান্য ডিভিশন ম্যানেজারদের চিঠি লিখে জানিয়েছে, অবিলম্বে কর্মীদের জন্য বিশেষ ৫০ লক্ষ টাকার বিমা ঘোষণা করা হোক। এবং সবার দ্রুত টিকাকরণ করানো হোক। করোনায় ধুঁকছেন রেলকর্মীরা। স্টেশন মাস্টাররা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অধস্তন কর্মীদের ওভারটাইম করতে হচ্ছে।
রেলের কর্মী সংগঠনের দাবি, গত এক বছরে এক লক্ষেরও বেশি কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ সুস্থ হয়েছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুনীল কুমার জানিয়েছেন, অতিমারীর জেরে লকডাউনের সময় থেকে স্টেশন মাস্টার এবং অন্য ফ্রন্টলাইন কর্মীরা করোনা যোদ্ধার মতো লড়াই করছেন। দেশের চাকা ঘোরানোর গুরুদায়িত্ব তাঁদের কাঁধে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রেলকর্মীদের কথা সরকার ভাবছে না।