সোমবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তুরস্ক ও সিরিয়া। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। ভয়াল এই ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং সিরিয়ার বহু বাড়ি ও বহুতল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। রাস্তায়-রাস্তায় বিরাট ফাটল তৈরি হয়েছে। মারাত্মক এই বিপর্যয়ের জেরে কমপক্ষে সাড়ে ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তুরস্কেই ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিরাট এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ভারত তুরস্কের জনগণের পাশে আছে। এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত ভারত।'
তুরস্কের বিভিন্ন এলাকায় জায়গায়-জায়গায় বাড়িঘর ভেঙে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের খোলা জায়গায় সরে যেতে আবেদন করা হচ্ছে। ভগ্নপ্রায় ও ভেঙে পড়া বাড়িগুলি থেকে মানুষজনকে সরানোর কাজ চলছে। মার্কিন জিওললজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল গাজিয়ান্তেপ থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার (২০ মাইল) দূরে। এই ভূমিকম্পটি ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল। প্রায় ১০ মিনিট পর আবারও শক্তিশালী আরও একটি ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৬.৭।
আরও পড়ুন- ঢাকার বাতাসে ‘বিষ’, মাত্রাছাড়া দূষণে কমছে আয়ু, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির আশঙ্কা
তুরস্কের বিপর্যয় ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৪ এবং কেন্দ্রস্থল ছিল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক শহরে।
তুরস্কের হাবারতুর্ক টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত খবরে জানানো হয়েছে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের জেরে তুরস্কের মালতয়া, দিয়ারবাকির এবং মালত্যা প্রদেশে বহু ভবন ধসে পড়েছে। অন্যদিকে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পো এবং কেন্দ্রীয় শহর হামাতে ভূমিকম্পের জেরে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে।
আরও পড়ুন- কুকুর পুষলে দিতে হয় মোটা টাকা ট্যাক্স, পড়শি দেশেই চালু এই ব্যবস্থা
ভয়াল এই ভূমিকম্পের জেরে কেঁপে ওঠে গোটা দামাস্কাস। প্রাণভয়ে বাড়ি ও বহুতলগুলি থেকে দৌড়ে নীচে বেরিয়ে আসেন স্থানীয়রা। আতঙ্কে রাস্তায় নেমে পড়ে আট থেকে আশি। শক্তিশালী এই ভূমিকম্প লেবাননেও অনুভূত হয়েছে। প্রায় ৪০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল কম্পন। বৈরুতেরও অনেক বাসিন্দা তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়েন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় এই বিশাল বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ইজরায়েলও। ইজরায়েলের বেশ কিছু অংশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, 'আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রয়োজনীয় যে কোনও ধরনের সাহায্যে প্রস্তুত রয়েছে।' বিদেশমন্ত্রী এলি কোহেন জানান, দুর্যোগপীড়িতদের সাহায্যে দ্রুত একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।