জাতীয় জনগণনা পঞ্জি বা এনপিআর তৈরির ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের জন্মস্থান ও জন্মতারিখ জানানোর বিষয়টিতে আপত্তি প্রকাশ করলেনে কংগ্রেস শাসিত একাধিক রাজ্যের মুখ্যসচিবরা। বিজেপি বিরোধী দল পরিচালিত রাজ্যগুলির আপত্তির জবাবে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, পৃথকভাবে না হলেও ২০১০ ও ১৫ সালেও এই প্রশ্ন দুটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, এনপিআরে এই তথ্য দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক। কেউ না চাইলে তথ্য নাও দিতে পারেন।
Advertisment
শুক্রবার, নয়া দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রধান সচিব এ কে ভাল্লার নেতৃত্বে এনপিআরের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের আমলা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। তাদের সামনেই এনপিআর তৈরির ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের জন্মস্থান ও জন্মতারিখ জানানোর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মূলত কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি।
রাজস্থানের মুখ্যসচিব ডি বি গুপ্তা বলেন, 'যে দেশের বহু মানুষ নিজের জন্ম তারিখ জানেন না, তাঁরা কিভাবে অভিভাবকদের জন্মস্থান ও তারিখ মনে রাখবেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই অবশ্য কেন্দ্র জানিয়েছে ওই দু'টি প্রশ্নই ঐচ্ছিক।' আগামী ১লা এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী শুরু হবে এনপিআরের কাজ। এই সময়েই এনপিআর সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরজিসিসিআই।
Advertisment
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল-সহ মোট ১৩টি রাজ্য এখনও পর্যন্ত এনপিআর হতে দেবে না বলে সরব। ইতিমধ্যেই বাংলা ও কেরালায় এনপিআররের কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। তবে, গতকালের ওই বৈঠকে কেরালার প্রতিনিধি হাজির থাকলেও ছিল না এরাজ্যের কোনও প্রতিনিধি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, 'ওড়িশ্যার তরফে প্রথম প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েকটি রাজ্য একই আপত্তি তোলে। কেন্দ্রের ব্যাখ্যা আমরা দিয়েছি। মনে করি প্রতিনিধিরা সন্তুষ্ট বয়েছেন।' মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, 'কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০১০ ও ১৫ সালেও এই প্রশ্ন দুটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, এনপিআরে এই তথ্য দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক। কেউ না চাইলে তথ্য নাও দিতে পারেন।'
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, এনপিআর লাগুতে কোনও রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না। যদি ইচ্ছাকৃত কেউ বাধা দেয় তবে তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এছাড়াও গতকালের বৈঠকে জনগণনা বাস্তবায়িত কীভাবে হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের তরফে প্রশিক্ষণরত আইএস অফিসারদেরও জনগণনার কাজে অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বলা হয়েছে, ৯৮ জন বিশেষজ্ঞ ১,৮৮০ মাস্টার ট্রেনারকে এই কাজের প্রশিক্ষণ দেবেন। তাদের আবার ৪৩,৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা। সব মিলিয়ে ২৯,৯২,০০০ জন দেশজুড়ে এরপিআরের কাজ করবেন।