মঞ্চে সবেমাত্র বক্তৃতা করতে উঠেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদি । হটাৎ করেই সবার নজর এড়িয়ে মঞ্চে উঠে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করেন এক হামলাকারী। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে ঘাড়ে গলায় পরপর ছুরির আঘাত চলে প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে।
মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গোটা প্রেক্ষাগৃহের নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। মুহূর্তের মধ্যেই ধরে ফেলা হয় আততায়ীকে। সালমান রুশদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে আপাতত ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি। তবে চিকিৎসকদের অনুমান প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হলেও একটি চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে রুশদির।
মুম্বইতে জন্মগ্রহণ করেন ঔপন্যাসিক রুশদি। এর আগেও তাঁর একাধিক লেখার কারণে ইরানি মুসলমানদের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পাওয়ার পর বহু বছর আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। শুক্রবার নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন মঞ্চে উঠে রুশদির ঘাড়ে এবং গলায় একের পর এক ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এই ঘটনায় সারা বিশ্বজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: < পিছন থেকে একের পর একে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত বঙ্গতনয়া, ফের সামনে এল পিটবুলের আক্রমণ >
সূত্রের খবর টানা ১০-১২ বার তাঁকে কোপানর চেষ্টা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে হামলার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে । অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘণ্টা পর, রুশদি ভেন্টিলেটরে ছিলেন এবং শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কথা বলার মত অবস্থায় তিনি ছিলেন না। ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ের কারণে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি। রুশদির বুক এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি একটি ইমেলে সংবাদ সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন “সলমান সম্ভবত একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন না এবং তার লিভারে গুরুতর চোট লেগেছে।
রুশদি বোম্বেতে একটি মুসলিম কাশ্মীরি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার চতুর্থ উপন্যাস 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'-এর জন্য প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন, যা সবচেয়ে বিশিষ্টভাবে ইরানের শক্তিশালী ধর্মগুরু এবং নেতা আয়াতুল্লাহ রুহোল্লা খোমেইনির কাছ থেকে, যিনি ঔপন্যাসিককে হত্যা করার জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানিয়ে একটি ফতোয়া ঘোষণা করেছিলেন। ২০১২ সাল থেকে রুশদির মাথার দাম আরও বাড়ানো হয় ইরানের আধা-সরকারি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তরফে।